
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ভয়াল ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছিল নয় বছরের ছোট্ট শিশু রাইসা মনি। শেষবারের মতো যখন নিজের গ্রামের মাটিতে ফিরল, তখন কফিনের ভেতরেই ফিরল সে,নিঃশব্দ, নিথর।
শুক্রবার সকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বাজড়া গ্রামের গোপালপুর ইউনিয়নের ঈদগাহ ময়দানজুড়ে শুধু কান্না আর কান্না। শিশুটি যখন লাশ হয়ে গ্রামে ফিরল, তখন থেকে গোটা পাড়া জুড়ে শোকের মাতম। রাইসার মা শেষবারের মতো কফিন ছুঁয়ে ধরে যে কান্নায় ভেঙে পড়লেন, তাতে আকাশ-বাতাসও ভারী হয়ে উঠল। কেউ নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি, পাশে থাকা এমন মানুষ ছিল না যে কাঁদনি।
তৃতীয় শ্রেণির এই শিশুটি ছিল বাবা ও মায়ের কলিজার টুকরো। বড় বোন সিনথিয়া আর ছোট ভাই রাফসানের সঙ্গে সেও হাসি-খুশিতে ভরা ছিল, না ছিল কোনো দুঃখের ছায়া। অথচ বিধাতা কেড়ে নিল সব,ছিন্নভিন্ন মুখমণ্ডল দেখে সিএমএইচে বাবার বুক ফেটে চৌচির হয়েছিল। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট যখন জানিয়ে দিল, এ-ই সেই রাইসা, তখন কোনো ভাষাই ছিল না বাবার।
বৃহস্পতিবার রাতে যখন লাশ গ্রামে পৌঁছাল, তখন রাতের আঁধারেও ভেঙে পড়ল বাজড়া গ্রামের বুক। আজ শুক্রবার সকালে জানাজা পড়া হলো শত মানুষের অশ্রুজলে। জানাজা শেষে শামসুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার কবরস্থানে কবর দেওয়া হলো ছোট্ট পাখিটিকে।
তার চাচা ইমদাদুল শেখ কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘রাইসাকে আজ ভোরে নিয়ে এসেছি। জানাজা শেষ, এখন আর কিছু বলার নেই।’
স্থানীয়রা বলছে, এমন মৃত্যু তারা কোনো দিন দেখেনি, একটি গ্রামের সবাই কাঁদছে এক শিশুর জন্য। ঈদগাহ ময়দানে দাঁড়ানো প্রতিটি চোখ অশ্রুসজল। মায়ের বুক ফাঁকা, বাবার বুক পুড়ে ছাই, অথচ কফিনের ভেতরে নিশ্চুপ রাইসা, কারও কোনো ডাক শোনার আর সুযোগ নেই তার।
একটি শিশুর মৃত্যু আর একটি গ্রামের অশ্রুতে ভেসে যাওয়া, শুধু শূন্যতা রেখে গেল ছোট্ট রাইসা মনি।




























