
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভূমধ্যসাগরের ইতালির উপকূলে ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ঘটে যায় এক ভয়াবহ সামুদ্রিক দুর্ঘটনা। কোস্টা কনকর্ডিয়া নামের বিলাসবহুল প্রমোদতরীটি সেই সময় প্রায় সাড়ে চার হাজার যাত্রী ও নাবিক বহন করছিল। কিন্তু ক্যাপ্টেন ফ্রান্সেস্কো শেটিনোর অবহেলা ও হঠকারিতার কারণে মুহূর্তেই আনন্দের ভ্রমণ রূপ নেয় মৃত্যুফাঁদে। প্রাণ হারান অন্তত ৩২ জন যাত্রী ও কর্মী।
জানা যায়, ওইদিন ক্যাপ্টেন শেটিনো তার বান্ধবী ও সাবেক নৃত্যশিল্পী ডমনিকা সেমোর্টানকে প্রভাবিত করার জন্য জাহাজটিকে দ্বীপের খুব কাছ দিয়ে চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়া তিনি প্রাক্তন বসকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্যও স্বাভাবিক রুট থেকে সরে আসেন। কিন্তু এ সিদ্ধান্তই বিপদ ডেকে আনে।
চশমা না থাকার কারণে অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকা সহকারীর নির্দেশনায় জাহাজ চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারান শেটিনো। হঠাৎ করেই পাথরে ধাক্কা খেয়ে প্রায় ৭০ মিটারজুড়ে ফেটে যায় জাহাজের তলদেশ। মুহূর্তেই ইঞ্জিনঘরে পানি ঢুকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রথমদিকে যাত্রীদের আশ্বস্ত করতে থাকলেও দ্রুতই জাহাজ কাত হয়ে ডুবে যেতে থাকে।
সাহসী ভারতীয় কর্মী রাসেল রেবেলো ও কর্ণনাথ রমেশনা যাত্রীদের বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন। কিন্তু রাসেল শেষ পর্যন্ত নিজেই প্রাণ হারান। কয়েক ঘণ্টার উদ্ধার অভিযানে বেশিরভাগ যাত্রীকে নিরাপদে তোলা সম্ভব হলেও ৩২ জন আর বাঁচানো যায়নি।
সবচেয়ে নিন্দনীয় বিষয় ছিল, সবার আগে ক্যাপ্টেন শেটিনো নিজেই লাইফবোটে উঠে নিরাপদে চলে যান। পরে আদালতে তিনি সব দায় চাপান সহকারী নাবিকের ওপর এবং দাবি করেন তিনি নাকি পা পিছলে বোটে পড়ে গিয়েছিলেন। আদালত তার এই অজুহাত মানেনি এবং তাকে দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এই দুর্ঘটনায় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কোস্টা কনকর্ডিয়ার ডুবে যাওয়া আজও সামুদ্রিক ইতিহাসের অন্যতম বড় ট্র্যাজেডি হিসেবে বিবেচিত হয়।
সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান



























