
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: মাইলস্টোন স্কুলের ভগ্নস্তূপের নিচে চাপা পড়ে দুই ছোট্ট শিশুর নিথর দেহ, একটা হলুদ রঙের খেলনা বিমান, আর অজস্র অপূর্ণ প্রশ্ন… এই দৃশ্য যে কোনো মা-বাবাকে পাথর করে দিতে যথেষ্ট। তানজিনা আর রফিকের জীবন থেকে এক মুহূর্তেই হারিয়ে গেছে তাদের সব সুখের গল্প, নাফি আর নাজিয়া।
তানজিনা বারবার স্বপ্নে ফিরে যাচ্ছেন শেষ দেখা মুখগুলোর কাছে। ছোট্ট নাজিয়া, হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতর,মায়ের হাত চেপে ধরে বলছিল, ‘খালা হাত ছাড়িস না।’ মুখ ফুলে দু’চোখ এক হয়ে গিয়েছিল নাজিয়ার, কিছুই দেখতে পাচ্ছিল না। তৃষ্ণায় ছটফট করে বলেছিল, ‘পানি খাইতে চাই।’ চিকিৎসকের অনুমতি পেয়ে মুখে পানি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তখন সে বলেছিল, ‘এতে আমার পিপাসা মিটবে না খালা, ঠান্ডা জুস খাইতে চাই, আইসক্রিম খাইতে চাই।’ যন্ত্রণা কমাতে দেওয়া হয়েছিল ব্যথানাশক, আর সেই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পেতেই নিভে গেল ছোট্ট প্রাণটা।
তানজিনা বলছিলেন, ‘দেখার মতো কোনো জায়গা ছিল না বাচ্চাগুলার গায়ে। আদর করে কাছে নেওয়ারও উপায় ছিল না। দূর থেকে শুধু দেখছি, কিছুই করতে পারিনি।’
আর নাফি? বাসায় থাকলে হলুদ বিমানটা নিয়ে কত্ত দাপাদাপি! সেই হলুদ খেলনা এখন বাসার এক কোণে, নাফি নেই। খেলনা আছে, হাসির শব্দ নেই।
নাজিয়া আর নাফির নানি নাজমা বেগমের গলা ভেঙে আসে, ‘এই বাচ্চারা নাই, এইটা আমি নিজেই মানতে পারতেছি না, আমার মেয়েরে কেমনে বুঝামু?’
রফিকের পাথর হয়ে যাওয়া চোখ দুটো এখনো ভেজা। তিনি কিছু বলতে পারছেন না। এত বছর ধরে সাজানো সংসারে এমন শূন্যতা—কোথায় লুকিয়ে রাখবেন এই শোক?
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি শুধু দুইটা শিশুকে কেড়ে নেয়নি,একটা পরিবারের হাসি-আনন্দ, স্বপ্ন আর বেঁচে থাকার আশাটাকেই গিলে ফেলেছে। এখন আছে শুধু একরাশ স্মৃতি, একরাশ না-পাওয়া, আর থামতে না চাওয়া কান্না…




























