আওয়ার টাইমস নিউজ:
স্টাফ রিপোর্টার: বিদ্যুৎ খাতে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে ২৫ বছরের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের সরকারি উদ্যোগ স্থগিত হয়ে গেছে। সরকারি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, চুক্তি বহাল রাখতে প্রভাবশালী অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে। এর ফলে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান কার্যক্রমও ত্রুটিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
২০১৭ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সমন্বয়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই চুক্তি সম্পাদন করেন। চুক্তিতে বিদ্যুতের দাম এবং আমদানি করা কয়লার খরচ অত্যধিক দেখানো হয়েছিল। সূত্রের খবর, শেখ হাসিনার সাবেক মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস একাই বিদেশে দেড়শ কোটি টাকার বেশি অর্থ পাচার করেছেন। চুক্তির কারণে প্রতি মাসে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
হাইকোর্ট গত বছরের ডিসেম্বরে চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করলেও সরকারিভাবে কার্যক্রম থেমে যায়। রিটকারী আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ুম অভিযোগ করেছেন, আদালতের নির্দেশনা অনুসরণে কোনো অগ্রগতি নেই, ফলে তিনি হতাশ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদানি চুক্তি এখনো বহাল থাকায় দেশের অর্থনীতি ও জনগণের ওপর চাপ বাড়ছে। চুক্তি বাতিল না হলে বাংলাদেশকে আগামী ২৫ বছরে প্রায় ২৩.৮৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হতে পারে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের খরচ ভারতের অন্যান্য কেন্দ্রের তুলনায় ৫০% বেশি।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির জানিয়েছেন, চুক্তির অসঙ্গতি প্রমাণিত হলে পুনর্বিবেচনা করা হবে এবং অনিয়ম থাকলে চুক্তি বাতিল করা হবে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধেও প্রতারণা এবং ঘুস লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যুৎ খাতের বিশ্লেষকরা মনে করেন, আদানি চুক্তি দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং চুক্তি বাতিল করা ছাড়া সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন ও কমিটির রিপোর্ট হাতে পেলেই সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবে।
cgt