আওয়ার টাইমস নিউজ।
অর্থনীতি: আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা পতনের মুখে পড়েছে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম সর্বোচ্চ $৪,৩৪৭-এর কাছাকাছি পৌঁছানোর পর পরবর্তী দিনগুলিতে ১–২ শতাংশ কমে $৪,২৫০-এর আশেপাশে দাঁড়িয়েছে। এই পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টির পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগের সুযোগও তৈরি করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সোনার দামের পতনের প্রধান কারণ হলো মার্কিন ডলারের সাময়িক শক্তিশালী অবস্থান এবং বিশ্ব বাণিজ্যে কিছুটা স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক মন্তব্য, যেখানে চীনের ওপর সম্ভাব্য শুল্ক আরোপ নিয়ে “অস্থিতিশীলতা কমানো” বিষয়ে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, তা বাজারে সোনার চাহিদাকে সাময়িকভাবে কমিয়েছে। ডলারের শক্তি বেড়ে গেলে অন্যান্য মুদ্রায় সোনা তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে, যা ক্রয়দরকে প্রভাবিত করে।
বিশ্ববাজারে সোনার সরবরাহ সীমিত, তবে বিনিয়োগকারীরা এখনো সোনাকে নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে দেখছেন। HSBC-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে সোনার গড় দাম প্রতি আউন্স $৪,৪৫৫-এর আশেপাশে হতে পারে, এবং ২০২৬ সালের মধ্যে $৫,০০০ পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। Goldman Sachs-এর মত বহুজাতিক বিনিয়োগ সংস্থাও সোনার মূল্য আগামী বছরগুলিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।
বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোনার দাম সাময়িকভাবে পতিত হলেও এটি অস্থিরতার বাজারে এখনও নিরাপদ আশ্রয়। বৈশ্বিক রাজনৈতিক উত্তেজনা, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং মুদ্রার মানের ওঠানামা সোনার বাজারকে সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে। তাই বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি হলো ঝুঁকিপূর্ণ হলেও দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক সম্পদ।
বিশেষজ্ঞরা আরও সতর্ক করছেন যে, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও বাণিজ্য-নীতি অনুযায়ী সোনার দাম দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। ফলে বিনিয়োগকারীদের বাজার পর্যবেক্ষণ এবং সমসাময়িক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
সামগ্রিকভাবে, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার সাম্প্রতিক পতন হলো অস্থিরতার স্বাভাবিক প্রতিফলন। দীর্ঘমেয়াদে সোনার চাহিদা এবং মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিনিয়োগের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা অপরিহার্য।
এদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম সাময়িকভাবে কিছুটা কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব সীমিত রয়েছে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম $৪,২৫০-এর কাছাকাছি পৌঁছানোর পর সামান্য পতন দেখা গেছে। তবে বাংলাদেশের বাজারে ২২ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ভরি ২,১৬,৩৩২ টাকা এবং ২৪ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ভরি ২,৩০,০০০ টাকার কাছাকাছি রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের স্বর্ণের দাম প্রধানত ডলারের বিনিময় হার, আমদানি শুল্ক এবং স্থানীয় চাহিদার উপর নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক বাজারে সাময়িক পতন হলেও স্থানীয় বাজারে দাম এখনও উচ্চস্তরে অবস্থান করছে।
বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সোনার দাম দ্রুত ওঠানামা করতে পারে। তাই দীর্ঘমেয়াদে সোনার মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা অপরিহার্য।
সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী, বাংলাদেশে ক্রেতাদের জন্য সোনা এখনও একটি দামী সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, এবং আন্তর্জাতিক বাজারে সাময়িক পতন স্থানীয় বাজারে এখনো কোন প্রভাব ফেলেনি।