
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আর নেই, এই খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজধানী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত সাধারণ মানুষের চোখে নেমে আসে অশ্রু। রাজনীতি যাঁর জীবনের অংশ ছিল, তাঁর বিদায়ে কাঁদছে রাজনীতির বাইরের মানুষও।
মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই বিএনপির কার্যালয়, তাঁর বাসভবনের আশপাশ এবং বিভিন্ন জেলায় দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ভিড় জমতে থাকে। অনেককে চোখের পানি ধরে রাখতে না পেরে প্রকাশ্যে কাঁদতে দেখা যায়। কেউ নীরবে দাঁড়িয়ে ছিলেন, কেউ আবার কোরআন তেলাওয়াতে মগ্ন হন।
ঢাকার গুলশানে অপেক্ষমাণ এক বয়স্ক নারী বলেন, “আমরা রাজনীতি বুঝি না, কিন্তু খালেদা জিয়াকে আমরা সাহসের প্রতীক হিসেবে জানতাম। তিনি অসুস্থ অবস্থায়ও মাথা নত করেননি।”
এক তরুণ কর্মজীবী বলেন, “তিনি শুধু একটি দলের নেত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন আপসহীনতার শিক্ষা।”
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বেগম খালেদা জিয়া বহু সংকট, কারাবরণ, অসুস্থতা ও প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন। তবু রাজনৈতিক অবস্থান থেকে সরে না আসার কারণে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে দৃঢ়তা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। সেই কারণেই তাঁর মৃত্যু শুধু একটি রাজনৈতিক দলের শোক নয়, বরং বহু সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত বেদনার নাম হয়ে উঠেছে।
বিশেষ করে নারী সমাজের অনেকেই তাঁকে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে দেখতেন। একজন গৃহিণী বলেন, “তিনি দেখিয়েছেন, একজন নারী চাইলে দেশের নেতৃত্ব দিতে পারে।”
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শোকের আবেগ ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক মতভেদ ভুলে অনেকেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, এই মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি যুগের অবসান।
আপোষহীনতার যে রাজনীতি বেগম খালেদা জিয়া প্রতিনিধিত্ব করতেন, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও তাঁর ব্যক্তিত্ব, দৃঢ়তা ও সংগ্রামী জীবনের প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা আজ চোখের পানিতে স্পষ্ট। রাজনীতির মঞ্চের বাইরেও তিনি যে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন, তাঁর মৃত্যু সেটাই আবার প্রমাণ করল।


























