
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজায় ভয়াবহ খাদ্য সংকটে দুর্ভিক্ষে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পাঁচ সন্তানের মা রীম তৌফিক খাদার করুণ অবস্থার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, গত পাঁচ মাসে তারা কোনো আমিষ খেতে পারেননি। তার চার বছরের ছেলেও জানে না ফলমূল বা সবজি দেখতে কিংবা খেতে কেমন।
জাতিসংঘ-সমর্থিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় সহায়তা প্রবেশে ইসরায়েল ব্যাপকভাবে বাধা দিচ্ছে। যদিও ইসরায়েল এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। শুক্রবার প্রকাশিত জাতিসংঘ সমর্থিত ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) প্রথমবারের মতো জানিয়েছে, গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকায় “সম্পূর্ণভাবে মানবসৃষ্ট” দুর্ভিক্ষ চলছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ২৭১ জন মানুষ দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন, এর মধ্যে ১১২ জন শিশু। ছয় সন্তানের মা রাজা তালবেহ জানান, এক মাসে তার ওজন ২৫ কেজি কমে গেছে। অন্যদিকে রিদা হিজেহ জানান, তার পাঁচ বছরের মেয়ে লামিয়ার ওজন নেমে গেছে প্রায় অর্ধেকের মতো। অপুষ্টিতে ভুগে মেয়েটি হাঁটতেও পারছে না।
ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা ‘ইউকে-মেড’ জানিয়েছে, গাজার ৭০ শতাংশ গর্ভবতী ও প্রসূতি নারী ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন, যার প্রভাবে নবজাতকরা ছোট ও নাজুক অবস্থায় জন্ম নিচ্ছে।
বাসিন্দা আসিল জানান, তিনি মাসের পর মাস ফল কিংবা আমিষ খেতে পারেননি। শিশুদের জন্য গুঁড়া দুধ খুঁজলেও সেটি পাওয়া যাচ্ছে না বা দাম এত বেশি যে কেনা অসম্ভব। এক ক্যান গুঁড়া দুধের দাম ১৮০ শেকেল বা প্রায় ৩৯ ইউরো।
সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মকর্তা শাইমা আল-ওবাইদি বলেন, গাজার দুর্ভিক্ষ কোনো চমকপ্রদ তথ্য নয়। রমজান মাস থেকেই সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষ ঘাস ও পাতা খেয়ে বেঁচে ছিল। অনেক শিশু ক্ষুধার যন্ত্রণায় বলছে, তারা যেন মারা যায় এবং জান্নাতে গিয়ে খাবার খেতে পারে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। এখন পর্যন্ত ৬২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অবরোধ ও দুর্ভিক্ষে গাজা মানবিক বিপর্যয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা




























