আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা জোরদার হচ্ছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা, উত্তপ্ত লেবানন সীমান্ত এবং চারপাশের অস্থিরতার মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে, তেহরান ও তেল আবিব সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। বিশ্লেষকদের ধারণা, চলতি বছরের ডিসেম্বরের আগে বা আগস্টের শেষের দিকে বড় ধরনের হামলা শুরু হতে পারে।
ইসরায়েলের প্রধান উদ্বেগ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি। জুন মাসে এই অজুহাত নিয়ে ইসরায়েল হামলা চালালেও মূল লক্ষ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্য পরিবর্তন। তবে প্রত্যাশিত ফল মেলেনি। ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দেখিয়েছে তাদের সামরিক সক্ষমতা এখনও অটুট। ফলে, এবার তেহরান শুরু থেকেই শক্তিশালী আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেন প্রমাণ করা যায় ইসরায়েলের সামরিক আধিপত্য অদম্য নয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আগের সংঘাতে তিনি সীমিতভাবে হামলায় রাজি হলেও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়াননি, যা ইসরায়েলের ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল। এবার যদি ট্রাম্প সরাসরি যুদ্ধে নামেন, তবে যুক্তরাষ্ট্র এমন এক সংঘাতে জড়াবে, যা ইরাক যুদ্ধকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ফরেন পলিসি বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইসরায়েল একা ইরানকে মোকাবিলা করতে পারবে না। কৌশলগতভাবে তারা যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি জড়ানোর চেষ্টা করছে, যাতে ইরানের সামরিক অবকাঠামো দুর্বল হয়, শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং দেশ দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত হয়। তবে জুনের যুদ্ধে ইরানের নেতৃত্ব দ্রুত পুনর্গঠিত হয় এবং পাল্টা আঘাতে ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ইসরায়েলের ধারণা ছিল আতঙ্ক সৃষ্টি করলে জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে যাবে, কিন্তু উল্টোটা ঘটেছে। জাতীয়তাবাদের ঢেউয়ে ইরানিরা আরও ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়ানোর দাবি করছে। এ অবস্থায় ইসরায়েল তার পুরোনো ‘ঘাস কাটা’ কৌশল অব্যাহত রাখতে চাইছে—অর্থাৎ ইরান সামরিক শক্তি গড়ে তোলার আগে হামলা চালানো। কিন্তু তেহরানও তা প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হলে ট্রাম্পের অবস্থান নির্ধারণমূলক হবে। তিনি সীমিতভাবে জড়াতে পারবেন না; তাকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে অংশ নিতে হবে অথবা সম্পূর্ণভাবে সরে আসতে হবে। আসন্ন কয়েক মাসই নির্ধারণ করবে, মধ্যপ্রাচ্য আবারও ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়াবে, নাকি কোনো সমঝোতার পথ খুলবে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—পরবর্তী সংঘাত আগের চেয়ে অনেক বেশি ধ্বংসাত্মক হবে।
সূত্র: সিএনএন-বিবিসি- আল জাজিরা