আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগে রওনা হওয়া ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরকে ইসরাইলি নৌবাহিনী আটকে দিয়েছে। এই নৌবহর খাদ্য, পানি ও ওষুধসহ জরুরি সামগ্রী নিয়ে ৪৪টি বেসামরিক জাহাজের মাধ্যমে গাজাভিমুখে রওনা হয়েছিল।
ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া ছিল সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, বাংলাদেশের আলোকচিত্রী শহীদুল আলম ও রুহি লরেন আখতারসহ বিভিন্ন দেশের শতাধিক অধিকারকর্মী। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গাজার এই অবরুদ্ধ জনগোষ্ঠীর জন্য ত্রাণ পৌঁছে দেওয়াকে মানবতার ক্ষেত্রে জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
ফ্লোটিলা আয়োজকরা জানান, যাত্রাপথে জাহাজগুলোকে একাধিকবার ইসরাইলি নৌবাহিনী আটক করেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করা হয়েছে এবং সংকেত বিঘ্নিত করা হয়েছে। প্রথম ধাপে অন্তত ১৩টি জাহাজকে সমুদ্রে আটক করা হয়, যেখানে ৩৭টি দেশের ২০১ জনের বেশি কর্মী ছিলেন। তবে একটি নৌযান গাজার উপকূলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।
ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ফ্লোটিলার জাহাজগুলো ‘বৈধ নৌ অবরোধ’ ভাঙার চেষ্টা করছে, কিন্তু এই দাবি আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী হিসেবে বিবেচিত। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আটককৃত যাত্রীরা নিরাপদে ইসরাইলে আনা হয়েছে এবং পরে ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে।
বিশ্বজুড়ে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কলম্বিয়া, ইতালি, যুক্তরাজ্য, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়াসহ বিভিন্ন দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ফ্লোটিলার উপর হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং মানবিক সহায়তার প্রতি নিষ্ঠুরতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ এবং কূটনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রতিবাদও জানানো হয়েছে।
গাজায় ১৮ বছর ধরে চলা ইসরাইলি অবরোধ ও সাম্প্রতিক হামলায় সেখানকার ২৪ লাখ মানুষের মানবিক সংকট ক্রমশ বেড়েই চলছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বারবার সতর্ক করেছে, অবরুদ্ধ এলাকার জনগণ অনাহার, রোগ ও সহায়তার অভাবে জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।
ফ্লোটিলার এই অভিযান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যে গাজার মানবিক সংকট শুধু আঞ্চলিক নয়, বরং বৈশ্বিক ন্যায় ও মানবাধিকারের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
সূত্র: আল জাজিরা