আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাদী পক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, মামলার অপর প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান–এর মধ্যে কোনো অনুশোচনা লক্ষ্য করা যায়নি। অপরদিকে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন মামলার সঙ্গে জড়িত থাকায় আদালতে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়েছেন বলে প্রক্রিয়াজাত তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালে বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আদালতে আনা প্রমাণ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেখা গেছে, উল্লেখিত আসামিরা এমন কাজ করেছেন যার কথা “দুনিয়ার সবাই জানে।” তাজুল বলেন, ঘটনার পরও তাদের মধ্যে অনুশোচনা দেখা যায়নি; বরং অভিযোগকারীরা যাঁদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে-বাড়িঘর ধ্বংস করার কথা বলা, লাশ বঙ্গোপসাগরে ফেলার মতো উগ্র মন্তব্য করা হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, মামলাসমূহে জরায়ু নষ্টকারী, গণবিচ্ছিন্নকারী ও গণহত্যাস্বরূপ আচরণ ধরা পড়েছে; নারী, শিশু ও ছাত্র-শ্রমিকসহ নিরীহ মানুষের ওপর নিষ্ঠুরতা চালানো হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন কেন এত বড় অপরাধের পরও কোনো রকম অনুশোচনা দেখা যাচ্ছে না এবং দাবি করেন, এসব অপরাধের বিনিময়ে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
তাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থায় বিভ্রান্তি ও অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টাও করা হয়েছে-সেই চেষ্টায় সেনাবাহিনীকে উসকানিরও চেষ্টা ছিল। কিন্তু, তিনি যোগ করেন, সেনাবাহিনী এবং সাধারণ জনগণ সেই প্ররোচনায় অংশ নেয়নি এবং বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
আসবাব–প্রমাণ ও সাক্ষ্য প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে ট্রাইব্যুনাল পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি জানান। মামলাগুলোর স্বার্থে যথাযথ তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচারের ওপর জোর রেখে তাজুল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ৮ অক্টোবর তিনটি আলাদা মামলায় মোট ২৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পরে এর মধ্যে ১৫ জনকে হাজির করে তাদের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু করা হয়; একই সময়ে কয়েকজন পলাতক আসামির নাম বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম ও মামলার তারিখ–কাল পরবর্তী সময়ে ধারাবাহিকভাবে নির্ধারণ করা হবে।