
আওয়ার টাইমস নিউজ।
রাজনীতি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয় বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই জয়কে অনেকে ইসলামপন্থীদের পুনরুত্থানের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। তবে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বিশ্লেষকদের মতে, এই ফলাফল সরাসরি জাতীয় নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের শক্তি বাড়ার প্রমাণ নয়, বরং তরুণ ভোটারদের মধ্যে কৌশলগত ভোটের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার একটি ইঙ্গিত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জেনারেশন জেড ভোটাররা এখন আর শুধু আদর্শের ভিত্তিতে ভোট দেন না। বরং তারা ভাবেন, কোন দল বাস্তবে জিততে পারবে এবং সেই হিসাব কষেই সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য ক্যাম্পাসে অনেক শিক্ষার্থী বামপন্থী বা মধ্যপন্থীদের সমর্থন করলেও শেষ পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন শিবিরকে, কারণ তাদের চোখে জয়ের সম্ভাবনা একমাত্র ওই দলেরই ছিল।
এই প্রবণতা জাতীয় নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত জাতীয় ভোটে বিএনপিই এখন ‘ফেবারিট’ হিসেবে আলোচনায় আছে। কারণ তরুণদের একটি বড় অংশ বিশ্বাস করছে, শেখ হাসিনার বিদায়ের পর ক্ষমতার জন্য বাস্তব প্রতিদ্বন্দ্বী একমাত্র বিএনপিই। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর এক জরিপে দেখা গেছে, ৩৮.৮ শতাংশ তরুণ মনে করছে বিএনপি জিতবে, আর জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন করছে ২১.৫ শতাংশ।
রাজনীতিবিদদের ভাষায় এটি এক ধরনের ‘সেলফ-ফুলফিলিং প্রফেসি’। অর্থাৎ যত বেশি মানুষ বিএনপিকে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছে, ততই ভোটাররা তাদের দিকে ঝুঁকছে। ফলে বিএনপি আরও অজেয় হয়ে উঠছে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনা আমলে দীর্ঘদিনের একতরফা নির্বাচনী অভিজ্ঞতা তরুণদের মধ্যে এক নতুন ভোটসংস্কৃতি তৈরি করেছে। যেখানে বাস্তবতা ও জয়ের সম্ভাবনা আদর্শের চেয়ে বড় বিষয় হয়ে উঠেছে। এর ফলে ছোট বা বিকল্প রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে অনেকেই ‘অপচয় হওয়া ভোট’ হিসেবে দেখতে শুরু করেছে।
তবে বিএনপির জন্য এটি সহজ রাস্তা নয়। দলটির ভেতরে এখনও নেতৃত্ব ও ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু তাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, সাংগঠনিক ভিত্তি এবং তরুণদের চোখে শাসনক্ষমতার বাস্তব বিকল্প হিসেবে অবস্থান, এসব কারণে বিশ্লেষকদের মতে আসন্ন নির্বাচনে তাদের পাল্লাই এখন ভারী।




























