
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: একদিন অনাহারে থাকার পর বাড়ি ফেরার আশায় কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘুরছিল ১২ বছরের এক কিশোর। ক্ষুধার্ত শরীর আর দুরুদুরু বুকে ছেলেটি দুজন অপরিচিত যাত্রীর কাছে জানতে চায়, ‘বরিশালের ট্রেন কখন ছাড়বে?’ তারা জানায়, বরিশালে কোনো ট্রেন যায় না। কথাবার্তার এক পর্যায়ে সেই কিশোর জানায়, সে একদিন ধরে না খেয়ে আছে। এই কথার সুযোগে দুই যাত্রী তাকে খাবারের প্রলোভনে নিয়ে যায় অন্ধকার গন্তব্যে।
এরপর সেই কিশোরের জীবনের শেষ গন্তব্য হয় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর একটি আবাসিক হোটেলের ছোট্ট কক্ষ। সেখানেই অর্ধনগ্ন অবস্থায় পাওয়া যায় তার নিথর দেহ। তার পশ্চাদ্দেশ, ঠোঁট ও ডান চোখে দেখা গেছে অস্বাভাবিক আঘাতের চিহ্ন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জানায়, মর্মান্তিক এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে তারা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে টঙ্গী রেলস্টেশন থেকে আল আমিন নামে এক মাদকাসক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এই অপরাধে আরও জড়িত সাদ্দাম নামে একজন, যিনি এখন পলাতক।
পিবিআইয়ের তদন্তে জানা যায়, ১২ জুলাই সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে সেই কিশোর আল আমিন ও সাদ্দামের সঙ্গে পরিচিত হয়। ক্ষুধার কথা শুনে আল আমিন তাকে কিছু খাবার ও জুতা কিনে দেয়। সারাদিন রেলস্টেশন চত্বরে ঘোরাঘুরির পর সন্ধ্যায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় যাত্রাবাড়ীর একটি হোটেলে। সেখানে বিদ্যুৎ ছিল না। কিছুক্ষণ পর সাদ্দামও যোগ দেয়। এরপর দুইজন মিলে পালাক্রমে বলাৎকার করে কিশোরটিকে। নির্যাতনের পর বারবার মুক্তি চাইলেও দুই যুবকের মন গলেনি।
পরের দিন সকালে কিশোরটি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখনো তারা নির্যাতন চালাতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সেই কিশোরের মৃত্যু হয় হোটেলের অন্ধকার কক্ষে।
পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের উপপরিদর্শক মো. কবির হোসেন বলেন, ‘দু-মুঠো ভাতের জন্য একটি শিশুর এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করেছি, অপরজনকে ধরতে অভিযান চলছে। এখনও ভুক্তভোগী কিশোরের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে তার বাড়ি বরিশাল জেলায়।’
ভিকটিমের পরিচয় শনাক্তে তার ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছে এবং বরিশালে অনুসন্ধান চালাচ্ছে পিবিআইয়ের জেলা শাখা।
বিষয়: শিশু নির্যাতন, সামাজিক অবক্ষয়, আইনশৃঙ্খলা





























