আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজা যেন এক জ্বলন্ত বন্দিশিবির। দখলদার ইসরায়েলের অবরোধ ও নিরবচ্ছিন্ন হামলায় এই উপত্যকার অর্থনীতি প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো, জীবন বাঁচাতে ন্যূনতম খাবারও এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
রবিবার (৩ আগস্ট) আলজাজিরার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, গাজায় ২ কেজি মসুর ডাল আর ১ কেজি আটা কিনতেও প্রায় ২০০ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫ হাজার টাকা) লাগছে। অথচ এই টাকায় এক পরিবার এক মাস চলার মতো খাবার কিনে নিতে পারতো কোনো এক সময়।
আর্থিক লেনদেনও এখন চরম সঙ্কটে। কেউ ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে চাইলে, তাকে দালালের সাহায্য নিতে হচ্ছে। কিন্তু সেই দালাল তুলে দেওয়া অর্থের প্রায় ৪০ শতাংশ নিজের কাছে রেখে দিচ্ছে। উদ্বাস্তু সাবের আহমেদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, ১০০০ শেকেল তোলার পর আপনি হাতে পাবেন মাত্র ৬০০ শেকেল।
তিনি জানান, ২০০ ডলার নিয়েও যদি বাজারে যান, তবুও মিলবে না সামান্য ডাল-আটা। এখন প্রতিদিন বেঁচে থাকার জন্য অন্তত ৩০০ ডলার প্রয়োজন।
সঙ্কটের চিত্র এখানেই শেষ নয়। পুরোনো মুদ্রা দিয়ে কিছু কিনতেও পারছে না গাজার মানুষ। একজন গাজাবাসী নারী মারিয়াম হাসান বলেন, ১০০ শেকেলের পুরোনো নোট নিয়ে বাজারে গিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো দোকানি তা নিচ্ছে না। এখন আমি কী করব?
অন্যদিকে ইসরায়েল ঘোষণা দিয়েছিল, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ‘বিরতি’ দিয়ে কিছু মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেবে। তবে গাজার বাসিন্দাদের ভাষ্য মতে, এই সহায়তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। প্রতিদিনের বেঁচে থাকার লড়াই যেন আরও কঠিন করে তুলেছে এই ‘মানবিক বিরতিও।
একটি অঞ্চলে যদি ২৫ হাজার টাকায়ও খাবার না পাওয়া যায়, তাহলে সেটি শুধুই খাদ্য সংকট নয়, তা এক মানবিক বিপর্যয়ের চরম পর্যায়।
সূত্র: আলজাজিরা