
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: ইসলাম মানবজাতিকে দুনিয়ার নানা ফেতনা ও পরীক্ষার মোকাবিলা করার শিক্ষা দেয়। বিশেষত দাজ্জাল, যিনি পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় ফিতনার প্রতীক,তার ফেতনা থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহ আমাদেরকে সুস্পষ্ট পথ দেখিয়েছেন। নবীজি মুহাম্মদ (সা.) আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন যে জুমার দিনে সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকার এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
সূরা কাহাফের তেলাওয়াতের ফজিলত
নবীজি (সা.) বলেছেন:
مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَضَاءَ لَهُ مِنَ النُّورِ مَا بَيْنَ الْجُمُعَتَيْنِ
“যে ব্যক্তি শুক্রবার সূরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য দুই জুমার মধ্যে আলোর ব্যবস্থা করা হবে।”
(সহীহ নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
এখান থেকে আমরা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পাই:
১. আলোর উৎস: সূরা কাহাফ পাঠের মাধ্যমে মুমিনের জীবন আলোকিত হয়, যা তাকে শিরকের অন্ধকার ও দুনিয়ার ফেতনার বিরুদ্ধে দৃঢ় রাখে।
২. ফেতনা থেকে নিরাপত্তা: দাজ্জালের ফিতনার সময় এই আলোকিত আত্মবিশ্বাস ও ঈমান মুমিনকে সঠিক পথে রাখে।
৩. নিয়মিত জুমার আমল: শুক্রবার সূরা কাহাফ পাঠের অভ্যাস ঈমানকে শক্তিশালী করে এবং ফেতনা ও শয়তানের মন্দ প্রভাবে থেকে রক্ষা করে।
কোরআন থেকে শিক্ষা
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন:
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ
“আমরা নিশ্চয় আপনাদেরকে কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, সম্পদ, প্রাণ ও ফসলের ক্ষতি দিয়ে পরীক্ষা করব। ধৈর্যশীলদের শুভ সংবাদ দাও।”
(সুরা আল-বাকারা: ১৫৫)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, দুনিয়ায় পরীক্ষা ও ফিতনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ধৈর্য, ঈমান, এবং আল্লাহর নিকট স্থিরতা অপরিহার্য। সূরা কাহাফ তেলাওয়াত এই ঈমানের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
দাজ্জালের ফেতনা ও সূরা কাহাফ
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, দাজ্জাল তার শক্তি প্রদর্শনের জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করবে। তিনি এমন একটি সময়ে ফেতনা ছড়াবেন যখন মানুষের ঈমান দুর্বল হবে। নবীজি (সা.) শিক্ষা দিয়েছেন যে সূরা কাহাফের কিছু অংশ বিশেষভাবে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করে।
বিশেষ অংশসমূহ:
১. আয়াতুল কুরসি (সুরা বাকারা: ২৫৫) ঈমান ও সুরক্ষা বৃদ্ধিতে শক্তিশালী।
২. সুরা কাহাফ: ১–১০ নং আয়াত, আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ ভরসা এবং ধৈর্য প্রদর্শনের শিক্ষা।
৩. সুরা কাহাফ: ৩১–৪১ নং আয়াত, দুনিয়ার প্রলোভন ও ফিতনার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার শিক্ষা।
দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ
প্রতি জুমার দিন সূরা কাহাফ পড়া।
সূরা কাহাফের তেলাওয়াতের সময় মনোযোগ দিয়ে অর্থ বোঝার চেষ্টা করা।
সূরা কাহাফের আয়াতের স্মরণীয় অংশ মনে রাখা এবং জীবনে প্রয়োগ করা।
এভাবে মুমিন নিজের আত্মাকে আলোকিত রাখে এবং দুনিয়ার ফেতনা, বিশেষত দাজ্জালের প্রলোভন ও প্রভাবে থেকে রক্ষা পায়।
শুক্রবার সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা কেবল সওয়াবের কাজ নয়, এটি ঈমানের রক্ষাকবচ। নবীজির সুন্নাহ অনুসরণ করে মুমিন দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকতে পারে। প্রতিটি মুসলিমের উচিত শুক্রবার এই আমলকে নিয়মিত জীবনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা।



























