আওয়ার টাইমস নিউজ।
রাজনীতি: বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ধারার ইঙ্গিত নিয়ে সামনে এলো “জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫”-এর খসড়া। প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে—প্রধানমন্ত্রী হলে কেউ আর দলীয় প্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। একইসঙ্গে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে, অর্থাৎ ১০ বছর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন। এ ছাড়াও সংসদকে দুই কক্ষবিশিষ্ট করার সুপারিশ করা হয়েছে।
খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরেও সাম্য, সুবিচার ও মানবিক মর্যাদার পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। বরং ক্ষমতার অপব্যবহার ও একদলীয়করণের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়েছে। জনগণের সাম্প্রতিক আন্দোলন দেশকে নতুন কাঠামোয় গড়ার প্রত্যাশা তৈরি করেছে।
প্রস্তাবিত মূল পরিবর্তনসমূহ
রাষ্ট্রভাষা থাকবে বাংলা, নাগরিক পরিচয় হবে ‘বাংলাদেশি’।
সংবিধান সংশোধনে দুই কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন প্রয়োজন হবে।
জরুরি অবস্থার অনুমোদনে বিরোধী দলের নেতার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক থাকবে।
মৌলিক অধিকার প্রসারিত করা হবে, তবে কয়েকটি দল আপত্তি জানিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন সংসদের দুই কক্ষের সদস্যদের ভোটে, এবং তিনি মানবাধিকার কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের ক্ষমতা পাবেন।
অভিশংসনে দুই কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন বাধ্যতামূলক করা হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে নতুন কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে একটি বাছাই কমিটি প্রধান উপদেষ্টাকে নির্ধারণ করবে।
এই খসড়ার সবচেয়ে আলোচিত দিক হলো—প্রধানমন্ত্রী আর দলীয় প্রধান হতে পারবেন না এবং ক্ষমতায় থাকার সময়সীমা সর্বোচ্চ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ রাখা। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতার দখল ও একদলীয় আধিপত্য কমার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে সংসদকে দুই কক্ষবিশিষ্ট করার প্রস্তাব আইন প্রণয়নে আরও ভারসাম্য ও বিতর্কের সুযোগ এনে দিতে পারে।
তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্যও স্পষ্ট। বিশেষ করে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘বহু-জাতি, বহু-ধর্মী ও বহু-ভাষী বাংলাদেশ’-এর স্বীকৃতির প্রস্তাবে একাধিক দল আপত্তি জানিয়েছে। ফলে খসড়া নিয়ে সামনে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।