
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের বিজয় ভারতের কলকাতার বুদ্ধিজীবী মহলে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কলামিস্ট, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এ ফলাফলে উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে এটিকে “বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আদর্শিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত” বলে অভিহিত করেছেন।
কলামিস্ট স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য মনে করেন, এ ফল নির্দিষ্ট রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতাকে স্পষ্ট করেছে। তার মতে, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে অবিচল না থেকে আপসকামী রাজনীতি করার কারণেই মধ্যপন্থী ও বামপন্থী শক্তি মাঠে টিকতে পারেনি। তিনি বলেন, “শিবির পাল্টায়নি, বরং অন্যরা তাদের হাতে খেলা দিয়েছে।
বাংলা পক্ষ দলের নেতা গর্গ চট্টোপাধ্যায় আরো কঠোর ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ডাকসু নির্বাচনের ফলকে “রাজাকারের বাচ্চাদের জয়” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি দাবি করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও পাকিস্তানপন্থী আদর্শে আস্থাশীল হয়ে পড়েছে। তার ভাষায়, “এরা ১৯৭১ সালের গণহত্যা ও দমননীতির উত্তরাধিকার বহন করছে।
লেখিকা তসলিমা নাসরিন এ ঘটনায় অবাক হননি। তার মতে, বাংলাদেশের সমাজ এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে ‘জিহাদি জঙ্গি, মোল্লা-মৌলভি ও ধর্মের ব্যবসায়ীরা’ প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। তিনি দাবি করেন, “দেশটি ক্রমশ নারীবিদ্বেষী, সাম্প্রদায়িক ও সহিংসতার দিকে যাচ্ছে।”
কলকাতার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ফলাফল কেবল একটি ছাত্র সংসদের সীমিত জয় নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনীতিতে গভীর পরিবর্তনের ইঙ্গিত। অর্থনৈতিক হতাশা, নতুন নেতৃত্বের অনুসন্ধান এবং পুরোনো দলগুলোর প্রতি অনাস্থার কারণে ছাত্রসমাজ ভিন্ন পথে হাঁটছে।
এই প্রতিক্রিয়া শুধু ক্ষোভ নয়, বরং কলকাতার রাজনৈতিক ও বুদ্ধিজীবী মহলের জন্য একটি সতর্ক সংকেতও বটে। তারা আশঙ্কা করছেন, জামায়াত-শিবিরের এই উত্থান কেবল বাংলাদেশের রাজনীতিকে প্রভাবিত করবে না, পশ্চিমবঙ্গের ভেতরেও নতুন আদর্শিক দ্বন্দ্বের জন্ম দিতে পারে।
সূত্র: আনন্দবাজার, দ্য টেলিগ্রাফ, বিবিসি বাংলা




























