
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় দিনের জবানবন্দীতে দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান গুরুতর অভিযোগ এনেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ ছিল শেখ হাসিনার পূর্বপরিকল্পিত পদক্ষেপ, যেখানে আদালতকে ব্যবহার করা হয়েছিল। এমনকি পরবর্তীতে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা নিজেও এ সিদ্ধান্তের স্বীকারোক্তি দেন।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল-১–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে আদালত শুরু হলে মাহমুদুর রহমান তার অসম্পূর্ণ জবানবন্দী শেষ করেন। এরপর শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাকে জেরা করেন।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ
জবানবন্দীতে তিনি আরও দাবি করেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে—তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আন্দোলন দমন ও গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রতিদিন রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় কোর কমিটির বৈঠকে পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নিতেন, যেখানে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা হতো।
মাহমুদুর রহমান বলেন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের হত্যা করে লাশ গুম করার নির্দেশ দেন, যা জাতিসংঘের রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে।
জেরা ও অতিরিক্ত বক্তব্য
রাষ্ট্রপক্ষের জেরায় তিনি জানান, পুলিশের উচ্চপদস্থ নিয়োগেও শেখ হাসিনা নিজের পছন্দমতো কর্মকর্তাদের বসাতেন। সেনাবাহিনীর প্রতি শেখ হাসিনার বিদ্বেষের প্রমাণ পাওয়া যায় সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার কৃষ্ণান শ্রীনিবাসনের লেখা “দ্য জামদানি রেভোলিউশন” বইতেও, যেটির কোনো তথ্য শেখ হাসিনা কখনো অস্বীকার করেননি।
জবানবন্দী শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মাহমুদুর রহমান বলেন, “শেখ হাসিনা হিটলারকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। হিটলার গণহত্যা চালালেও কখনো ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার নির্দেশ দেননি, অথচ হাসিনা সরাসরি সে নির্দেশ দিয়েছেন।”
প্রসিকিউশনের প্রতিক্রিয়া
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, একজন গবেষক ও সম্পাদক হিসেবে মাহমুদুর রহমান আদালতে আওয়ামী লীগের অতীত ও বর্তমানের ‘ফ্যাসিস্ট রূপ’ তুলে ধরেছেন। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্টের বিশ্লেষণসহ তার সাক্ষ্য ট্রাইব্যুনালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে থাকবে।




























