আওয়ার টাইমস নিউজ।
লাইফস্টাইল: বিয়ের বন্ধন কেবল এক ছাদের নিচে থাকা বা তিন বেলা খাবার জোগানোর নাম নয়—এটি মন ও অনুভবের এক গভীর সংযোগ। অথচ আমাদের সমাজে বহু স্ত্রী আজও নিজের ভালোবাসার প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত। "তিন বেলা খেতে দিই, এর চেয়ে আর কী চাই?"—এই বক্তব্য যেন অনেক স্বামীর মানসিকতার প্রতিচ্ছবি। অথচ, একজন নারীর হৃদয় চায় স্বীকৃতি, সম্মান, আর একটু সময়, একটু বোঝাপড়া।
সম্প্রতি এক গৃহবধূর কান্নাজড়িত বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। তিনি বলেন, ভরপেট খেতে পাই ঠিকই, কিন্তু আমার চোখে কখনো ভালোবাসার চাহনি পড়েনি। স্বামী বাইরে গেলে কখন ফিরবে, জানি না। আসলেও ব্যস্ত ফোন আর টিভি নিয়ে। আমার কথা, আমার অনুভব, সবই যেন অপ্রয়োজনীয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু আর্থিক দায়িত্ব পালন করলেই সম্পর্ক পূর্ণতা পায় না। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সময় দেওয়া, ছোট ছোট ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ—এসবই একটি দাম্পত্য জীবনের ভিত্তি। বিশেষ করে নারীর মানসিক চাহিদা ও অনুভব বুঝে পাশে থাকা প্রয়োজন।
একটি দাম্পত্য সম্পর্ক তখনই টেকে, যখন উভয়পক্ষই একে অপরের ‘শ্রেষ্ঠ বন্ধু’ হতে পারে। কিন্তু যখন স্বামী মনে করেন, আমি খাওয়াচ্ছি, পরাচ্ছি, এতেই ভালোবাসা শেষ, তখন সম্পর্ক ধীরে ধীরে একপাক্ষিক দায়িত্বে পরিণত হয়।
সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, বর্তমান সময়ে দাম্পত্য সম্পর্কগুলোতে নীরবতা বেড়েছে, কিন্তু বোঝাপড়া কমেছে। এর মূল কারণ হতে পারে প্রযুক্তি আসক্তি, ব্যস্ত জীবন, অথবা আবেগগত অজ্ঞতা।
এই প্রেক্ষাপটে দরকার সচেতনতা। একটি সুন্দর সংসার গড়তে হলে কেবল বাজার করা, রান্না এনে দেওয়া বা বিল পরিশোধ করলেই চলবে না—প্রয়োজন মানসিক উপস্থিতি, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পরিপূর্ণ প্রকাশ।
স্বামী যদি সত্যিই স্ত্রীকে ভালোবাসেন, তবে তাঁকে বুঝতে হবে তিন বেলা খেতে দেওয়া দায়, কিন্তু “ভালোবাসা” একমাত্র ভাষা যা হৃদয় জয় করতে পারে।