আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী নতুন করে সীমান্ত অঞ্চলে বিমান হামলা চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উভয় দেশই একে অপরকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করছে। থাই সেনাবাহিনী জানায়, পূর্বাঞ্চলীয় উবন রাতচাথানি প্রদেশের দুটি এলাকায় নতুন করে গোলাবর্ষণ শুরু হয়। এতে একজন থাই সেনা নিহত এবং চারজন আহত হন। পরবর্তীতে থাইল্যান্ড বিমান থেকে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়।
অন্যদিকে, কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, কয়েক দিন ধরে থাইল্যান্ড উসকানিমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং সোমবার ভোরে বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে কম্বোডিয়া কোনো পাল্টা হামলার দাবি করেনি।
চলতি বছরের জুলাইয়ে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ দিনের সংঘর্ষ হয়েছিল। এতে ৪৮ জন নিহত এবং প্রায় ৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। সেই সময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। পরে অক্টোবর মাসে কুয়ালালামপুরে বর্ধিত শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সীমান্তে উত্তেজনা কমে আসলেও গত মাসে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে একজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর থাইল্যান্ড ঘোষণা দেয় যে তারা চুক্তির বাস্তবায়ন স্থগিত করবে।
থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়ার ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে ১৯০৭ সালের ফরাসি উপনিবেশ আমলের মানচিত্র নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। ২০১১ সালে দুই দেশের মধ্যে টানা এক সপ্তাহ ধরে আর্টিলারি গোলাবর্ষণও হয়েছিল।
সোমবারের সংঘর্ষের পর সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা চরমে, এবং বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি ভেঙে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। উভয় দেশই সামরিক সতর্কতা জোরদার করেছে, আর স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।