আওয়ার টাইমস নিউজ।
রাজনীতি: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী দিনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তিনি ফেসবুকে প্রকাশিত এক পোস্টে বলেছেন, দেশের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি কীভাবে মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে তা সহজেই দেখা যায়।
তারেক রহমান বলেন, মাসের পর মাস ধরে সরকারি সেবা পেতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। হাসপাতাল থেকে স্কুল, রাস্তাঘাট থেকে বাজার, সবকিছুতেই দুর্নীতি প্রভাব ফেলে। এটি লাখো মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করছে।
তিনি স্মরণ করিয়েছেন, বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই নতুন নয়। বিএনপির শাসনামলে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে ও সরকারি সেবা স্বচ্ছ করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সময়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে আধুনিকায়ন, নতুন ক্রয় নীতিমালা, কঠোর আর্থিক আইন এবং শক্তিশালী অডিট ব্যবস্থা চালু হয়।
২০০৪ সালে ‘দুদক’ গঠনের মাধ্যমে স্বাধীন কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া কাজ করতে সক্ষম। তৎকালীন সময়ে এই পদক্ষেপগুলো দুর্নীতি কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে স্বীকৃত হয়।
তারেক রহমানের পোস্ট অনুযায়ী, বিএনপি গর্ব করতে পারে কিছু বড় পদক্ষেপের জন্য:
১. শক্তিশালী অর্থ ব্যবস্থাপনা: বাজেট নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং ও মানি লন্ডারিং-বিরোধী আইন।
২. স্বচ্ছ ক্রয় নীতি: নিয়ম মেনে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ব্যবস্থা।
৩. উন্মুক্ত বাজার: টেলিকম, মিডিয়া, বিমান পরিবহন ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।
৪. ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: প্রশাসন সহজ, জবাবদিহি বাড়ানো।
আগামী পরিকল্পনায় বিএনপি আরও পদক্ষেপ নিতে চায়:
১. প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা: আদালত, দুদক, নির্বাচন কমিশন ও সরকারি সেবা রাজনৈতিক চাপমুক্ত রাখবে।
২. পুরোপুরি স্বচ্ছতা: উন্মুক্ত দরপত্র, সম্পদ বিবরণী, রিয়েল-টাইম অডিট।
৩. বিচার ও আইনশৃঙ্খলা সংস্কার: পেশাদার পুলিশিং, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ।
৪. ই-গভর্ন্যান্স: লাইসেন্স, জমি, পেমেন্ট, সব অনলাইনে।
৫. হুইসলব্লোয়ার সুরক্ষা: অনিয়ম ফাঁসকারীদের নিরাপত্তা।
৬. নৈতিক শিক্ষা: স্কুল-কলেজে সততার পাঠ্যক্রম।
৭. শক্তিশালী আর্থিক নজরদারি: ডিজিটাল ব্যয় ট্র্যাকিং ও স্বাধীন অডিট।
ফেসবুক পোস্টের শেষ অংশে তারেক রহমান বলেন, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন, কিন্তু সৎ নেতৃত্ব ও জনগণের সমর্থন থাকলে পরিবর্তন সম্ভব। জনগণ যদি সুযোগ দেয়, বিএনপি আবারও এই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।