
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা ক্রমশ বাড়ছে। ফিলিস্তিন, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেনে চলমান সংঘর্ষ এবং সাম্প্রতিক দোহা হামলা পুরো অঞ্চলে নতুন উত্তেজনার সূচনা করেছে। কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাঁচজন হামাস নেতা এবং একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। হামলাটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সমালোচিত হচ্ছে এবং পুরো আরব বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। (সূত্র: আল জাজিরা)
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল সুদানি আল জাজিরাকে জানান, মুসলিম দেশগুলোর আত্মরক্ষার জন্য যৌথ সামরিক বাহিনী গঠন এখন সময়ের দাবি। তার মতে, ইসলামি দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হলে ইসরায়েলি আগ্রাসন প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। বিশেষ করে দোহায় আসন্ন আরব-ইসলামিক সম্মেলনের প্রেক্ষাপটে এই আহ্বান আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। (সূত্র: আল জাজিরা)
ইসলামি সামরিক জোটের ধারণা নতুন নয়। এক দশক আগে মিসর এই প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু রাজনৈতিক মতপার্থক্য, আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ভিন্ন ভিন্ন জোটগত সম্পর্কের কারণে তা কার্যকর হয়নি। দোহা হামলার পর আবারও প্রশ্ন এসেছে—মুসলিম দেশগুলো কি বাস্তবভাবে একটি যৌথ সামরিক বাহিনী গড়তে পারবে?
ইসরায়েলের হামলা ঘিরে উপসাগরীয় দেশগুলো—বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)—কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। ২০২০ সালে ইউএই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করলেও, দোহা হামলার পর এখন এই সম্পর্কের ওপর নতুন চাপ তৈরি হয়েছে। সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত ও ওমানও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে বাধ্য হচ্ছে।
দোহা হামলার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রাম। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, এখনই মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়। তবে প্রশ্ন থেকে যায়—এই ঐক্য কি বাস্তবে সামরিক রূপ নেবে? অতীতে আরব লীগ বা ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) কার্যকর সামরিক উদ্যোগ নেনি।
ইসলামি আর্মি গঠনের পথে রাজনৈতিক বিভক্তি, ভিন্ন জোটের সক্রিয়তা এবং অর্থনৈতিক ও সামরিক সক্ষমতার বৈষম্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। তবে বাস্তবতা হলো—যদি মুসলিম দেশগুলো সত্যিই একটি যৌথ বাহিনী গড়ে তোলে, তা শুধু ইসরাইলকে নয়, বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্যেও প্রভাব ফেলবে।
দোহা হামলা দেখিয়েছে, ইসরায়েল এখন আর কেবল গাজা বা লেবাননেই সীমাবদ্ধ নয়; মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও হামলা চালাতে দ্বিধা করছে না। ইসলামি আর্মির ধারণা এখন কেবল রাজনৈতিক প্রতীক নয়, বরং বাস্তব চাহিদা হিসেবে সামনে এসেছে। মুসলিম দেশগুলো কি সত্যিই ঐক্যবদ্ধ হবে, নাকি কূটনৈতিক জটিলতায় উদ্যোগ থেমে যাবে—এখন সেটিই বড় প্রশ্ন।
সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স




























