আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে স্বপ্নে দেখার আকাঙ্ক্ষা প্রায় প্রতিটি ঈমানদারের অন্তরে বাস করে। এমন সৌভাগ্য অর্জন করা সহজ নয়, তবে কোরআন ও সহীহ হাদীস অনুযায়ী কিছু আমল রয়েছে, যা একজন মুমিনকে নবীজির নৈকট্যে পৌঁছে দিতে পারে। এরমধ্যে সবচেয়ে ফলপ্রসূ এবং পরীক্ষিত একটি আমল হচ্ছে, জুমার দিনে অধিক পরিমাণে দরুদ শরীফ পাঠ করা।
নবীজিকে স্বপ্নে দেখার হাদীস
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:
"যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখেছে, সে আমাকে বাস্তবেই দেখেছে। কারণ, শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না।" (সহীহ বুখারি, হাদীস: ৬৬১৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২২৬৬)
এটি প্রমাণ করে, নবীজিকে স্বপ্নে দেখা বাস্তব এবং নির্ভরযোগ্য একটি বিষয়। তবে তা লাভ করার জন্য দরকার অন্তরের খালিসতা, আমলের ধারাবাহিকতা এবং বিশেষ কিছু আমল—যেমন দরুদ শরীফ পাঠ।
জুমার দিনের ফজিলত ও দরুদ পাঠ
জুমার দিন হলো মুসলমানদের জন্য সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এদিন আমল বেশি কবুল হয় এবং দরুদ পাঠের বিশেষ ফজিলত রয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:
"তোমরা জুমার দিনে ও রাতে আমার উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। নিশ্চয়ই তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছানো হয়।" (সুনান আবু দাউদ, হাদীস: ১৫৩১)
সেই মোক্ষম আমল কী?
অনেক ওলিয়ে কামেল ও বুযুর্গদের অভিজ্ঞতায় পাওয়া যায়, কেউ যদি প্রতি শুক্রবার আসরের নামাজের পর নিরিবিলি বসে অন্তত ৮০ বার এই দরুদটি পড়ে, তাহলে আল্লাহর কৃপায় তার নবীজিকে স্বপ্নে দেখার সুযোগ হতে পারে।
দরুদটি হলো:
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ وَعَلَى آلِهِ وَسَلِّمْ تَسْلِيمًا
(উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাল্লিম তাসলিমা")
এই আমলটি সহীহ হাদীসে নেই, তবে বেশ কিছু ওলির জীবনী এবং ইসলামী সাহিত্যে এটি আধ্যাত্মিক অনুশীলন হিসেবে স্বীকৃত। মূল কথা হলো, এটি বিদআত নয়, বরং নবীজির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের একটি নিঃস্বার্থ আমল।
করণীয় ও প্রস্তুতি:
স্বপ্নে নবীজিকে (সা.) দেখার জন্য শুধু আমল করলেই হবে না—তার জন্য অন্তর পরিশুদ্ধ করতে হবে। নিচের কাজগুলো নিয়মিত করার চেষ্টা করা উচিত:
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাআতের সাথে আদায়
প্রতিদিন অন্তত ১০০–৫০০ বার দরুদ পাঠ
হারাম থেকে বেঁচে থাকা
কোরআন তিলাওয়াত ও ইস্তেগফার
দোয়া ও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা: “হে আল্লাহ! আমি তোমার রাসুলকে স্বপ্নে দেখতে চাই, তুমি আমায় সে সৌভাগ্য দান করো”
নবীজিকে স্বপ্নে দেখা কোনো গ্যারান্টি ভিত্তিক বিষয় নয়। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে এক অনুগ্রহ, যার জন্য চাই ইখলাস, আমল এবং গভীর ভালোবাসা। তবে জুমার দিনে দরুদ শরীফ পাঠ—এমন এক মোক্ষম আমল যা বহু মুসলমানের জীবনে অলৌকিক পরিবর্তন এনেছে। আপনিও যদি নিয়মিত এ আমল চালিয়ে যান, একদিন হয়তো সেই বিরল সৌভাগ্য আপনার কপালেও জুটে যেতে পারে।