আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর ন্যায়পরায়ণতা ও নৈতিক আদর্শকে সামনে রেখে দেশ পরিচালনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় ন্যায়, ইনসাফ ও মানবিকতার চর্চাই হবে আগামী দিনের মূল ভিত্তি।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফুট এলাকায় আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরে লাখো নেতাকর্মীর সামনে আবেগঘন ভাষণে তিনি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা তুলে ধরেন।
বক্তব্যের শুরুতে তারেক রহমান মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতেই তিনি আবার প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরতে পেরেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস আত্মত্যাগ ও গণআন্দোলনের ইতিহাস ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তন, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
গণসংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, “প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আসুন আমরা সকলে মিলে প্রতিজ্ঞা করি, ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে, তারা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ন্যায়পরায়ণতার আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।”
তিনি আল্লাহর সাহায্য কামনা করে বলেন, যদি মহান আল্লাহর রহমত এ দেশ ও দেশের মানুষের পক্ষে থাকে, তাহলে পরিশ্রম ও ঐক্যের মাধ্যমে একটি প্রত্যাশিত ও মর্যাদাশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
এক পর্যায়ে তারেক রহমান দেশবাসীর উদ্দেশে নিজের রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রচিন্তার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কিংবদন্তি নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের ভাষায় বলতে চান “আই হ্যাভ আ প্ল্যান ফর দ্য পিপল অব মাই কান্ট্রি।” এই পরিকল্পনা দেশের মানুষের কল্যাণ, উন্নয়ন ও ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যেই তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দেশের গণতন্ত্রকামী সব মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। সবাই পাশে থাকলে এবং ঐক্যবদ্ধ হলে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন সময় এসেছে সবাইকে একসঙ্গে দেশ গড়ার। এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলাই তাদের লক্ষ্য, যে বাংলাদেশে মানুষ নিরাপদে ঘর থেকে বের হয়ে নিরাপদে ফিরে আসতে পারবে, যেখানে কথা বলার অধিকার থাকবে, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হবে এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে ন্যায্য প্রাপ্য পাওয়া যাবে।
এর আগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লাল-সবুজ রঙে সাজানো একটি বাসে করে গণসংবর্ধনাস্থলে পৌঁছান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে তিনি মঞ্চে ওঠেন এবং ৩টা ৫৭ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন। মঞ্চে উঠেই নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি।
গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তারেক রহমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান। পুরো আয়োজনজুড়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল আবেগ, প্রত্যাশা ও ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়ার অনুভূতি।