
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: ভারতে নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সতর্ক করে বলেছেন, তার দল আওয়ামী লীগকে যদি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে লাখ লাখ সমর্থক সেই নির্বাচন বয়কট করবে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “পরবর্তী সরকারের বৈধতা আসবে নির্বাচনের মাধ্যমেই। কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে-তারা ভোট দেবে না। যদি কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা চান, তাহলে এত মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না।”
রয়টার্স জানায়, ভারতের দিল্লিতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা এই সাক্ষাৎকারে বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুধু অবিচারই নয়, বরং এটি হবে এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তিনি আশা প্রকাশ করেন, “শেষ পর্যন্ত বিবেকের জয় হবে এবং আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।”
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বছরের জুলাই মাসে ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ ও ধর্মভিত্তিক কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবির মুখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে।
এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’ বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে দেয়, ফলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।
রয়টার্স ও ইনডিপেনডেন্টে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার রায়ের অপেক্ষা চলছে। জুলাই আন্দোলন দমন অভিযানে ১,৪০০ মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেছে প্রসিকিউশন।
তবে শেখ হাসিনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ইনডিপেনডেন্টকে বলেন, “এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক প্রহসনের বিচার। আমি কোনো হত্যার নির্দেশ দিইনি। মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার ভুল সিদ্ধান্তের কারণে হতাহতের সংখ্যা বেড়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, “আমি নেতা হিসেবে দায় স্বীকার করি, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীকে জনতার ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছি—এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
দেশে ফেরার ইচ্ছার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি অবশ্যই দেশে ফিরতে চাই, যদি সেখানে বৈধ সরকার ও সাংবিধানিক শাসন ফিরে আসে।”
শেখ হাসিনার এই বক্তব্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত কী হবে, তা এখন রাজনৈতিক মহলের কৌতূহলের কেন্দ্রে।


























