আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গাজা উপত্যকা দখল করার পরিকল্পনার প্রতিবাদে দেশব্যাপী হাজারো মানুষ রাস্তায় নামছে। গত শুক্রবার ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা পাঁচ দফা নীতিমালা অনুমোদন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে গাজার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় বিক্ষোভকারী জনগণ ইসরায়েলি সেনাদের সামরিক অভিযানে অংশ না নিতে আহ্বান জানাচ্ছে।
বিক্ষোভে গাজায় আটক ৫০ জিম্মির পরিবারের সদস্যরাও অংশগ্রহণ করেন। তাদের অভিযোগ, নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা জিম্মিদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে। তারা সরকারকে দ্রুত জিম্মিদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, এই পরিকল্পনা জিম্মিদের মুক্তিতে সহায়ক হবে। তবে জিম্মিদের পরিবার ও বিরোধী দলীয় নেতারা এ সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করেছেন এবং সামরিক অভিযান বৃদ্ধির বিরোধিতায় ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।
জেরুজালেমে এক বিক্ষোভে সাবেক সেনারা জানান, তারা আর এই রাজনৈতিক যুদ্ধে অংশ নেবেন না যা তাদের ভাই-বোনদের জীবন বিপন্ন করছে। বিক্ষোভকারীরা তেল আবিবে প্রধান সামরিক সদরদপ্তরের সামনে ধর্মঘট ও সাধারণ নাগরিকদের জন্য কর্মবিরতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামির নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছেন যে, গাজার পূর্ণ দখল নেওয়া “ফাঁদে পা দেওয়ার মতো” এবং এতে বন্দী জিম্মিরা গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়বেন। জনগণের জরিপে দেখা গেছে অধিকাংশ ইসরায়েলি নাগরিক হামাসের সঙ্গে শান্তি চায় এবং যুদ্ধ শেষের পক্ষে।
নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার অনুমোদিত পাঁচ দফা হলো, হামাসকে নিরস্ত্র করা, সব বন্দী মুক্ত করা, গাজার অস্ত্র সরানো, নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ নেওয়া এবং নতুন বেসামরিক প্রশাসন গঠন।
আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিভিন্ন দেশে এই পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ইসরায়েলকে গাজায় মানবিক সাহায্য দ্রুত পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে এসেছে। এছাড়া জার্মানি ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টিজনিত কারণে পাঁচজন মারা গেছেন, যার মধ্যে দুই শিশু। সামরিক হামলায় গত একদিনে ৫৯ জন নিহত ও ৩৬৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৫ জন ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। গত প্রায় দুই বছর ধরে চলা সংঘর্ষে গাজায় ৬১ হাজার ৪৩০ জনের বেশি মারা গেছে।