আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলাম ডেস্ক: জুমার দিন মুসলিমদের জন্য এক বিশেষ আধ্যাত্মিক গুরুত্ব বহন করে। এই দিনে সূরা কাহাফ পাঠ করা অত্যন্ত বরকতময় কাজ। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসাধারণ ফজিলতের কথা উল্লেখ রয়েছে, যা কিয়ামত দিবসে আলোর রশ্মি, গুনাহমুক্তি এবং আত্মার প্রশান্তি প্রদান করে।
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন।
الَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يَتْلُونَهُ حَقَّ تِلَاوَتِهِ أُو۟لَـٰٓئِكَ يُؤْمِنُونَ بِهِ ۗ وَمَنْ يَكْفُرْ بِهِ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ (সূরা বাকারাহ্)
“যে ব্যক্তিদের আমরা কিতাব প্রদান করেছি, তারা তা সত্যভাবে পড়ে। তারা এতে বিশ্বাসী। আর যে এটি অস্বীকার করে, তারা ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।”
এই আয়াত নির্দেশ দেয় যে কোরআন পাঠ ও তা অনুসরণ ব্যক্তি ও সমাজকে আধ্যাত্মিক দৃঢ়তা ও সতর্কতার শিক্ষা দেয়। বিশেষ করে জুমার দিনে সূরা কাহাফের তিলাওয়াত আত্মার প্রশান্তি, নৈতিক শক্তি এবং দুনিয়ার ফিতনা থেকে রক্ষা প্রদান করে।
> مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ أُضِيءَ لَهُ مِنَ النُّورِ مَا بَيْنَ الْجُمُعَتَيْنِ (আত-তারগীব ওয়াল-তারহীব ১/২৯৮)
হাদিস শরিফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন।
“যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহাফ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিনে তার পায়ের নীচ থেকে আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত আলোর রশ্মি প্রবাহিত হবে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ হবে।”
এখানে আলোর অর্থ আধ্যাত্মিক আলো বা নূর, যা মুসলিমকে দুনিয়ার অন্ধকার ও বিপদ থেকে রক্ষা করে।
সূরা কাহাফের তিলাওয়াত ব্যক্তি ও পরিবারের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
আরেক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এরশাদ করেন।
رَأَيْتُ رَجُلًا يَقْرَأُ سُورَةَ الْكَهْفِ فَحَاطَتْهُ سَحَابَةٌ فَقُلْتُ لَهُ إِذَا رَأَيْتَ ذَلِكَ فَأَخْبِرْ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: اكْتُبْ فِي القُرْآنِ لِتِلَاوَتِهِ سَكِينَةٌ (মুসলিম, ১৭৪২)
“একজন ব্যক্তি সূরা কাহাফ পাঠ করছিল। তখন তিনি দেখলেন একখণ্ড মেঘ তাকে ঘিরে রেখেছে। তিনি বিষয়টি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালামকে বললে, রাসূলুল্লাহ বললেন, তুমি সূরাটি পাঠ করতেই থাকো। কারণ এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে সাকীনা বা প্রশান্তি, যা কোরআন পাঠের জন্য অবতীর্ণ হয়েছে।”
‘সাকীনা’ অর্থ প্রশান্তি ও শান্তি।
সূরা কাহাফের পাঠে মন ও আত্মা শান্ত থাকে।
বৃহস্পতিবার সূর্যাস্ত থেকে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত পড়লে বিশেষভাবে আমল হিসেবে গণ্য হয়।
জুমার দিনে সূরা কাহাফের তিলাওয়াত আত্মার প্রশান্তি, নৈতিক দৃঢ়তা এবং গুনাহমুক্তির উৎস। প্রতিটি মুসলিমের জন্য এটি একটি সুন্নাহ, যা নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করলে জীবনে আলোকিত পথের দিশা তৈরি হয়।
মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে আমল করার তাওফিক দান করুন আমিন।