আওয়ার টাইমস নিউজ:
স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে রাজনৈতিক জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে এবার নতুনভাবে মাঠে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী। তারা ডা. ফরিদুল আলমকে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে প্রচারণা চালাচ্ছে।
দীর্ঘ ১৫ বছর মামলা-হামলার ভয়ে বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীরা নিষ্ক্রিয় থাকলেও গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর দুই দলের কর্মীরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। বিএনপির একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর বিপরীতে জামায়াত তাদের প্রার্থীকে সামনে রেখে ভোটের সমীকরণে নতুন চমক দেখাতে চায়।
অতীতের নির্বাচনী চিত্র
১৯৯১ সালে বিএনপির শাহনেওয়াজ চৌধুরী মন্টু বিপুল ভোটে জয় পান। তার মৃত্যুর পর গাজী শাহজাহান জুয়েল ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে জয়ী হন। তবে ২০০৮ থেকে টানা কয়েকটি বিতর্কিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই বিজয়ী ঘোষিত হন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের “ডামি নির্বাচনে” দক্ষিণ জেলা আ.লীগ সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বিজয়ী হন।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী
এ আসনে বিএনপির হয়ে মনোনয়ন চাইছেন কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা।
সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতা গাজী শাহজাহান জুয়েল
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি এনামুল হক এনাম
জেলা আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া
গুম থেকে মুক্তি পাওয়া নেতা সৈয়দ সাদাত আহমদ
মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুদ্দিন সালাম মিঠু
তাদের প্রত্যেকে নিজস্ব বলয় গড়ে তুলেছেন এবং আলাদা আলাদাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর ফলে বিএনপির ভেতরে গ্রুপিংও বাড়ছে বলে জানা গেছে।
সাবেক এমপি জুয়েল বলেন, “পটিয়ার মানুষ আমাকে অতীতে দুবার নির্বাচিত করেছেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখব।”
এনামুল হক এনাম বলেন, “১৬ মামলার আসামি হয়েছি, জেল খেটেছি, দমে যাইনি। এবারও ত্যাগীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে আশা করি।”
প্রবীণ নেতা ইদ্রিস মিয়া জানান, “মনোনয়ন না পেলেও দলের যে প্রার্থী থাকবেন তাকে বিজয়ী করতে কাজ করব।”
গাজী সিরাজ উল্লাহ বলেন, “১৫ বছর রাজপথে সংগ্রাম করেছি। এবার সুযোগ পেলে বিএনপিকে আসনটি উপহার দিতে পারব।”
বিকল্প প্রার্থীরা
এদিকে জামায়াতের প্রার্থী ডা. ফরিদুল আলম নির্বাচিত হলে পটিয়াকে জেলা ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর শল্য চিকিৎসক ডা. এমদাদুল হাসানকে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। ডা. হাসান পটিয়ার তরুণ ও সজ্জন চিকিৎসক হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
সব মিলিয়ে চট্টগ্রামের পটিয়া আসনে আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াত ও নতুন শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, একক প্রার্থী দাঁড় করাতে পারলে বিএনপি শক্ত অবস্থানে থাকবে, তবে জামায়াতের প্রচারণাও সমীকরণে চমক তৈরি করতে পারে।
cgt