আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: সব সরকারের আমলেই বিচারকদের ন্যায়নীতি ও নিরপেক্ষতা অক্ষুণ্ণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। শনিবার ‘১৮তম বিচার বিভাগ পৃথককরণ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে সংগঠনটির স্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শুধু একটি সাংবিধানিক দাবি নয়, এটি জাতির ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রাণশক্তি। বিচারকদের সততা ও নৈতিকতার মাধ্যমেই বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা টিকে থাকে।” তিনি বিচার বিভাগের চলমান সংস্কার কার্যক্রম তুলে ধরে বিচারকদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় বক্তারা বলেন, সংবিধানের মৌলিক চেতনা ও বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এখনই সময় এসেছে বিচার বিভাগীয় ও সহায়ক কর্মচারীদের পদ সৃজন, নিজস্ব বাজেট প্রণয়ন ও আর্থিক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার। একইসঙ্গে তারা নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন।
আলোচনায় বক্তারা আরও বলেন, রাজনৈতিক সরকারের দীর্ঘ অনীহার কারণে ঐতিহাসিক ‘মাসদার হোসেন মামলার রায়’ বাস্তবায়নে দীর্ঘ বিলম্ব ঘটে। অবশেষে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঐতিহাসিকভাবে ম্যাজিস্ট্রেসি পৃথককরণ সম্পন্ন হয়, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।
তারা মনে করেন, ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়েই পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা এখন সময়ের দাবি।
সভায় উপস্থিত বিচারকবৃন্দ সর্বসম্মতিক্রমে আশা প্রকাশ করেন, সরকার দ্রুত পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু করবে, যাতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বাস্তবভাবে প্রতিফলিত হয়।
সভা শেষে সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, “স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা কেবল বিচারকদের জন্য নয়, এটি জাতির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের ভিত্তি। বিচারক হিসেবে আমাদের সততা, পেশাদারিত্ব এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারই দেশের মানুষের আস্থা পুনর্গঠনে সবচেয়ে বড় শক্তি।”