
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজার আকাশে মার্কিন বিমান। নিচে হাজার হাজার ক্ষুধার্ত মানুষ। কিন্তু বিমান থেকে পড়ছে খাবারের প্যাকেট, আর সেই খাবারের জন্য মানুষ দৌড়াচ্ছে মরুর বালির মাঝে জীবন ঝুঁকি নিয়ে। এই দৃশ্য ইন্টারনেটজুড়ে ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এটাই কি সাহায্য, নাকি এক ধরনের অপমান?
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই যুক্তরাষ্ট্র গাজার নিরীহ জনগণের জন্য বিমান থেকে খাদ্যসামগ্রী ফেলছে। প্রথমদিকে এই উদ্যোগকে মানবিক সহযোগিতা মনে করা হলেও, এখন তা নিয়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে অসংখ্য মানুষ বলছেন, এভাবে খাবার ছুঁড়ে ফেলা আর গরু-ছাগলের সামনে খাবার ছোঁড়ার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। কেউ কেউ বলছেন, এগুলো ত্রাণ নয়, বরং এটি যেন এক নির্মম খেলা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমান থেকে ত্রাণ ফেলা কার্যকর কোনো মানবিক পন্থা নয়। এতে খাবার অনেক সময় মাটিতে আঘাতে নষ্ট হয় বা বালির মধ্যে মিশে অখাদ্য হয়ে পড়ে। আবার অনেক সময় ত্রাণ নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে আহত বা নিহত হচ্ছেন মানুষ। ত্রাণ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, বিমান থেকে খাবার ফেলা শুধু অকার্যকরই নয়, বরং অপমানজনকও।
এই পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, গাজায় বর্তমানে যেভাবে মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, সেটি একটি কলঙ্কজনক ও লজ্জাজনক ঘটনা।
এছাড়া বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল গাজায় মানুষ এখন খাদ্য ও ওষুধের জন্য মরিয়া। অথচ একদিকে হাজার হাজার টন অস্ত্র ও বোমা সরবরাহ করা হচ্ছে, অন্যদিকে খাবার ফেলা হচ্ছে আকাশ থেকে—এ যেন এক নির্মম বৈপরীত্য!
বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিমা বিশ্বের এই ত্রাণ কৌশল এক ধরনের “মুখ রক্ষার চেষ্টামাত্র”। কারণ একদিকে গাজায় হামলার সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে সেই ধ্বংসের মধ্যে খাবার ছুঁড়ে সহানুভূতির ভান করা হচ্ছে। এটা যেন একটি দ্বিচারিতা, যা মানবাধিকারের মৌলিক নীতির সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।
গাজার নাগরিকদের জন্য সত্যিকারের সহায়তা চাই, বোমা নয়, বরং স্থলপথে অবাধ খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহ।
সূত্র: Reuters




























