আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: জামালপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে পুরোনো ব্যাটারির অ্যাসিড মিশ্রিত ঘাস ও দূষিত পানি খেয়ে চারটি গরুর মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আরও আটটি গরু অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বুধবার সকালে উপজেলার ইটাইল ইউনিয়নের ওই এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত গরুগুলোর মালিক স্থানীয় কৃষক হেকমত আলী জানান, এসব গরুই ছিল তার একমাত্র জীবিকার ভরসা। সব হারিয়ে এখন তিনি দিশেহারা।
স্থানীয়রা জানান, শেরপুর জেলার দুই ব্যক্তি আপেল ও লিখন ডিগ্রীরচর এলাকায় অবৈধভাবে পুরোনো ব্যাটারি পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করার একটি ছোট কারখানা পরিচালনা করছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা ব্যাটারি থেকে সংগৃহীত অ্যাসিড ও বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য আশপাশের জমিতে ফেলছিলেন। এতে এলাকার মাটি ও পানির উৎস মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়ে।
হেকমত আলীর ১২টি গরু ওই দূষিত এলাকায় ঘাস খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে চারটি গরু ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বাকি আটটি গরু স্থানীয় পশু চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
অসহায় কৃষক বলেন, “গরুর দুধ বিক্রি করে সংসার চলত। এখন সব শেষ। জানি না, বাচ্চাদের পড়াশোনা কীভাবে চলবে।” তার দুই মেয়ে, ভাবনা ও লিমা, জানান, বাবার পরিশ্রমেই তাদের জীবনের সব কিছু চলত। এখন তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, ব্যাটারি বর্জ্য পোড়ানোর সময় ছড়িয়ে পড়া ধোঁয়া ও রাসায়নিক পদার্থের কারণে আশপাশের গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি এমনকি ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জামালপুরের নরুন্দি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সজিব জানান, ওই কারখানার ১৮ জন শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াহিয়া আল মামুন বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন জানান, মৃত গরুগুলোর ময়নাতদন্ত চলছে। সংগৃহীত নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।