
আওয়ার টাইমস নিউজ:
স্টাফ রিপোর্টার: কলকাতার লাগোয়া এক উপনগরীতে ব্যস্ত বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সের ভিড়ে অচেনা কিছু মুখের আনাগোনা শুরু হয়েছে কয়েক মাস ধরে। স্থানীয়দের কাছে তারা অপরিচিত হলেও, মাত্র এক বছর আগে এদের অনেকেই ছিলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের প্রভাবশালী নেতা। এখন তারা কলকাতার ওই ভবনের অষ্টম তলায় একটি ছোট অফিসে বসেই দলের কার্যক্রম চালাচ্ছেন—যেটিকে দলের ভেতরে ‘পার্টি অফিস’ বলা হলেও বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই এখানে রাজনৈতিক কোনো কার্যক্রম হয়।
কীভাবে গড়ে উঠল এই দফতর
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর ভারতে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা প্রথম দিকে ব্যক্তিগত বাসা বা রেস্তোরাঁ ভাড়া করে বৈঠক করতেন। পরবর্তীতে স্থায়ী একটি জায়গার প্রয়োজন হয়, আর সেখান থেকেই বাণিজ্যিক অফিস ভাড়া নিয়ে শুরু হয় এই কার্যক্রম। অফিসে বঙ্গবন্ধু বা শেখ হাসিনার কোনো ছবি, সাইনবোর্ড—কিছুই রাখা হয়নি সচেতনভাবেই, যাতে পরিচয় প্রকাশ না পায়।
প্রায় ৩০-৩৫ জনের বৈঠক সেখানে সম্ভব হলেও বড় জমায়েতের জন্য এখনও ভাড়া করতে হয় ব্যাংকোয়েট হল বা রেস্তোরাঁর অংশবিশেষ।
কারা আসেন এই অফিসে
ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের শীর্ষ ও মধ্যম পর্যায়ের অনেক নেতা, সাবেক মন্ত্রী, এমনকি কয়েক ডজন প্রাক্তন সংসদ সদস্য এখন কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় বসবাস করছেন। কেউ পরিবারসহ, কেউবা কয়েকজন মিলে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন। পাশাপাশি কিছু সরকারি কর্মকর্তা, পেশাজীবী ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারও সেখানে বসতি গড়েছেন।
নিয়মিত আসা-যাওয়ার সময় নির্দিষ্ট নয়—যখন দরকার হয়, তখনই নেতারা আসেন। দলের বাইরে অনেকেই এই অফিসের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানেন না, তবে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার অবগতির বিষয়টি নিশ্চিত।
ভার্চুয়াল মাধ্যমে দল পরিচালনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে দিল্লির কাছাকাছি অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ কম হলেও, দলীয় নির্দেশনা মূলত ভার্চুয়াল মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হয়। হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপে নিয়মিত যোগাযোগ, অনলাইন লাইভ সেশন, এবং মাঠ পর্যায়ের নেতাদের জন্য নির্দেশনা—সবই হয় অনলাইনে।
সমালোচনা ও জবাব
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে—যখন মাঠের কর্মীরা দেশে গ্রেপ্তার বা হামলার শিকার হচ্ছেন, তখন শীর্ষ নেতারা কেন বিদেশে? নেতারা এর জবাবে ১৯৭১-এর প্রবাসী সরকারের উদাহরণ টেনে বলেন, নিরাপদে থেকে সংগঠিত হওয়াই এখন জরুরি।
অর্থের জোগান
ভারতে থাকা নেতাদের ব্যয় চালাচ্ছেন দেশ-বিদেশে থাকা শুভানুধ্যায়ীরা। জীবনযাত্রায় এসেছে পরিবর্তন—যারা আগে গাড়ি ছাড়া চলতেন না, তারা এখন বাস-ট্রেনে চলাচল করছেন, কয়েকজন মিলে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকছেন, এবং খরচ ভাগাভাগি করছেন।
কতদিন প্রবাসে?
দলীয় নেতারা বলছেন, লড়াইয়ের মেয়াদ আগে থেকে নির্ধারণ করা যায় না। পরিস্থিতি অনুকূল হলেই দেশে ফেরা হবে।
cgt




























