আওয়ার টাইমস নিউজ:
স্টাফ রিপোর্টার: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জেলা মাদারীপুরে দীর্ঘ তিন যুগ ধরে ক্ষমতায় প্রভাব বিস্তার করেছে আওয়ামী লীগ। তবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এখানে রাজনৈতিক সমীকরণ দ্রুত পাল্টাচ্ছে। সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নতুন উদ্যমে মাঠে নেমেছে।
ইতিমধ্যে ইসলামী ধারার দলগুলো জনসংযোগ ও প্রচার কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা গ্রামীণ বাজার থেকে শুরু করে শহরের চা-স্টল পর্যন্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের মন জেতার জন্য।
পাঁচ উপজেলা ও চার পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই জেলায় মোট তিনটি আসন। আড়িয়ালখাঁ, কুমার ও নিম্ন কুমার নদীবেষ্টিত এ জেলার গত নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৩ হাজারের বেশি। এর মধ্যে মাদারীপুর-২ সবচেয়ে বড় আসন।
মাদারীপুর-১ (শিবচর)
এ আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়নের দৌড়ে আছেন। তাদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামাল জামান নূরুদ্দিন মোল্লা, সাবেক এমপি নাদিরা মিঠু চৌধুরী, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকী এবং সাবেক সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমানের নাম শোনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী করেছে উপজেলা আমির মাওলানা সরোয়ার হোসেনকে এবং ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী করেছে মাওলানা আকরাম হোসেনকে। তারা ইতিমধ্যে ইউনিয়ন থেকে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত প্রচার চালাচ্ছেন।
মাদারীপুর-২ (রাজৈর ও সদরের একাংশ)
এই আসনে দীর্ঘদিনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের পতনের পর বিএনপির অন্তত পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়নের জন্য সক্রিয়—যাদের মধ্যে আছেন সাবেক এমপি হেলেন জেরিন খান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহান, সাবেক ছাত্রদল নেতা মিল্টন বৈদ্য, মাসুদ পারভেজ এবং জাফর আলী মিয়া।
জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা আব্দুস সোবাহান খাঁন এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী মাঠে গণসংযোগে ব্যস্ত।
মাদারীপুর-৩ (কালকিনি, ডাসার ও সদরের একাংশ)
অতীতে আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হলেও বর্তমান এমপি আব্দুস সোবাহান গোলাপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের কারণে এই আসনে নৌকার জনপ্রিয়তা কমেছে। বিএনপির দুই কেন্দ্রীয় নেতা—সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুর রহমান মাশুক এবং সহ-গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন—মনোনয়নের প্রতিযোগিতায় আছেন।
জামায়াত এখানে প্রার্থী করেছে কালকিনি পৌর আমির রফিকুল ইসলাম মৃধাকে, আর ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হচ্ছেন মাওলানা এসএম আজিজুল হক।
রাজনৈতিক চিত্র
জেলা রাজনীতিতে বর্তমানে বিএনপির ভেতরে গ্রুপিং ও বিভক্তি স্পষ্ট। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন খুব পরিকল্পিতভাবে, সংগঠিত কাঠামো গড়ে নির্বাচনি মাঠে নেমেছে। তারা কেন্দ্র থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত কমিটি গঠন করে প্রচারণা চালাচ্ছে।
cgt