আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে উত্তেজনা তুঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করেছেন। তার বক্তব্যে শোনা যায়, ‘মোদি চোর, অমিত চোর, বিজেপি চোর’। এই কণ্ঠস্বর মুহূর্তেই রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত নতুন অভিবাসন আইনের সঙ্গে সম্পর্কিত। কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি জানিয়েছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আসা সংখ্যালঘু যারা ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে এসেছেন, তারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই থাকতে পারবেন। বিজেপি এটিকে মানবিক উদ্যোগ বললেও, মমতা মনে করেন এর মূল উদ্দেশ্য রাজনীতিক।
বিধানসভায় বক্তব্য রাখার সময় মমতা প্রশ্ন ছুড়েন, আইনটি কি সংসদে ঠিকভাবে আলোচনা হয়েছে? স্থায়ী কমিটি বা নির্বাচনী কমিটিতে কি আলোচনার সুযোগ হয়েছে? তিনি অভিযোগ করেন, ভোটের আগে ভোটার তালিকায় কৌশল চলছে। তবে তার দৃঢ় বিশ্বাস, ‘ভোটে বিজেপি জিততে পারবে না। এই আসনে আমরা থাকবো, অন্যরা থাকবেন, বিজেপির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
মমতার বক্তব্য শুরু হতেই বিজেপি বিধায়কেরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। কাগজ ছুঁড়ে তারা তাকে থামানোর চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত স্পিকার চারজন বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করতে বাধ্য হন।
মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিজেপি মূলত বাঙালিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সংসদীয় আচরণ নয়, গণতান্ত্রিকও নয়। তবে আমাকে তারা দমাতে পারবে না।
বিপরীতে, বিজেপি শিবির পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে মমতাকে ‘চোর’ বলে স্লোগান তোলে। মমতা সরাসরি মোদি ও অমিত শাহকে লক্ষ্য করে তাদের চুরি-অভিযোগ তুলে দেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বাকযুদ্ধ শুধু মুখের লড়াই নয়। এর পেছনে রয়েছে ২০২৬ সালের নির্বাচন। অভিবাসন নীতি ও ভোট রাজনীতির মিশ্রণ বাংলার রাজনীতিকে উত্তপ্ত করেছে। মমতার কঠোর বক্তব্য সমর্থকদের কাছে শক্তি জোগাচ্ছে, আবার বিরোধীরা মনে করছেন এটি তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতে প্রভাব ফেলতে পারে।
সংক্ষেপে, নতুন আইন শুধু অভিবাসন নয়, পশ্চিমবঙ্গের ভোট রাজনীতিকে ঝড়ের মুখে ফেলেছে। ভোটের এক বছরেরও কম সময় বাকি, আর এই সংঘাত আরও বাড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।