আওয়ার টাইমস নিউজ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিল, তা কমিয়ে এখন ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সাফল্য’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এই প্রতিক্রিয়া জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “শুল্কহার ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারা, যা পূর্বঘোষিত ৩৫ শতাংশের চেয়ে ১৫ পয়েন্ট কম, এটি আমাদের আলোচক দলের অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তিনি আরও জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয় এবং তা ছিল জটিল ও দীর্ঘ। কেবল শুল্কই নয়, অ-শুল্ক প্রতিবন্ধকতা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং কৌশলগত বাণিজ্য ইস্যু নিয়েও কঠোর আলোচনা হয়েছে। অবশেষে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি সুবিধা রক্ষা এবং মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার আরও বিস্তৃত করা সম্ভব হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই অর্জন আমাদের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে। একই সঙ্গে এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা, দৃঢ়তা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রতিফলন।
এর আগে, চলতি বছরের ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ববাজারে বাণিজ্য ঘাটতির অভিযোগে একতরফাভাবে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, তাদের পণ্যের ওপর বাংলাদেশ ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে রেখেছে বলেই পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পরে ৯ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র তিন মাসের জন্য ওই শুল্ক কার্যকারিতা স্থগিত করে এবং আলোচনার সুযোগ দেয়। সেই আলোচনার তৃতীয় দফা শুরু হয় ২৯ জুলাই, যেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন নেতৃত্ব দেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (USTR) দপ্তরের সঙ্গে তিনদিনব্যাপী বৈঠক শেষে নতুন সিদ্ধান্ত আসে।
নতুন তালিকায় শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, আরও কয়েকটি দেশের ওপরও ভিন্ন ভিন্ন হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে—
পাকিস্তানের ওপর ১৯%
ভারতের ওপর ২৫%
মিয়ানমারের ওপর ৪০%
শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনের ওপর ২০%
ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার ওপর ১৯%
আফগানিস্তানের ওপর ১৫%
ব্রাজিলের ওপর ১০%
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে স্বস্তির বার্তা নিয়ে এলেও, দীর্ঘমেয়াদে বাজার ধরে রাখতে হলে আরও কৌশলগত প্রস্তুতি ও বাণিজ্যনীতি পুনর্বিন্যাস প্রয়োজন।