
আওয়ার টাইমস নিউজ।
লাইফস্টাইল: সারাদিনের ক্লান্তি শেষে রাতের খাবার খাওয়ার পর অনেকেই এঁটো থালাবাসন সিঙ্কে রেখে ঘুমাতে যান। কাজটি দেখতে তুচ্ছ মনে হলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভ্যাস ধীরে ধীরে শরীরের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কারণ রান্নাঘরের সিঙ্ক বাইরে থেকে পরিষ্কার দেখালেও বাস্তবে এটি জীবাণুর অন্যতম আশ্রয়স্থল।
বিশেষ করে খাবারের উচ্ছিষ্টসহ থালাবাসন রাতভর পড়ে থাকলে উষ্ণ ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ই কোলাই, সালমোনেলা ও স্ট্যাফাইলোকক্কাসের মতো জীবাণু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই থালাবাসনে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে পুরো রান্নাঘরে ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে রান্নাঘরের সিঙ্কে টয়লেটের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর জীবাণু থাকতে পারে। এসব ব্যাকটেরিয়া খাবারে সংক্রমণ ঘটালে খাদ্যে বিষক্রিয়া, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া ও বমির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, নোংরা থালাবাসন পানিতে ভিজিয়ে রাখা আরও বেশি বিপজ্জনক। কারণ খাবারের অবশিষ্টাংশ ব্যাকটেরিয়ার জন্য পুষ্টির উৎস হিসেবে কাজ করে। সিঙ্কে পানি ব্যবহার করার সময় পানির ছিটা থেকে এসব জীবাণু হাত, স্পঞ্জ কিংবা রান্নাঘরের অন্য পৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে অজান্তেই জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
এ ছাড়া খালি হাতে থালাবাসন মাজলে নখের ফাঁক বা ত্বকের ছোট কাটাছেঁড়া দিয়েও সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকলে ত্বকের সংক্রমণ ছাড়াও কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গে জটিলতা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি এঁটো বাসনের গন্ধে পোকামাকড় আকৃষ্ট হয়ে জীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
কী করবেন নিরাপদ থাকতে?
স্বাস্থ্যকর থাকতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, রাতের খাবারের পর যত দ্রুত সম্ভব থালাবাসন পরিষ্কার করা। ডিশওয়াশার থাকলে তা ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো, কারণ উচ্চ তাপমাত্রায় ধোয়ার ফলে জীবাণু পুরোপুরি ধ্বংস হয়। হাতে ধোয়ার ক্ষেত্রে গরম পানি ও সাবান ব্যবহার করে ভালোভাবে পরিষ্কার করা জরুরি।
থালাবাসন মাজার স্পঞ্জ নিয়মিত পরিষ্কার ও শুকনো রাখা উচিত, কারণ ভেজা স্পঞ্জে জীবাণু দ্রুত বাড়ে। খুব ব্যস্ততার কারণে সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করা সম্ভব না হলে অন্তত দেরি না করে কাজটি শেষ করার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।
সবশেষে, সিঙ্ক সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার রাখলে এবং মাঝে মাঝে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্লিনার ব্যবহার করলে রান্নাঘর অনেকটাই জীবাণুমুক্ত থাকে। সুস্থ থাকতে রাতের এই ছোট সচেতনতা দীর্ঘমেয়াদে বড় সুরক্ষা দিতে পারে।






























