
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্ব আবারও পারমাণবিক উত্তেজনার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাকযুদ্ধ, সামরিক মহড়া এবং একের পর এক হুঁশিয়ারিতে সৃষ্টি হয়েছে বৈশ্বিক উদ্বেগ। এমন এক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার জলসীমার নিকট দুটি ওহাইও-ক্লাস পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে অন্যতম বড় সামরিক বার্তা, যা সরাসরি রাশিয়ার প্রতি হুঁশিয়ারি হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আরও উত্তাপ ছড়ায় রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভের এক মন্তব্য। তিনি সরাসরি বলেন, ট্রাম্প যেন রাশিয়ার ‘ডেড হ্যান্ড’ পারমাণবিক প্রতিশোধ ব্যবস্থা নিয়ে খেলতে না যান। এটি এমন একটি ভয়ংকর প্রযুক্তি, যা রুশ নেতৃত্ব পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিশোধ চালাতে সক্ষম। ট্রাম্প এই মন্তব্যের কড়া জবাবে বলেন, এটি “একজন নির্বোধের উসকানিমূলক হুমকি” এবং রাশিয়া যেন ভুলে না যায়, আমেরিকাও প্রস্তুত রয়েছে পাল্টা প্রতিক্রিয়ার জন্য।
যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ওহাইও-ক্লাস সাবমেরিনগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক। প্রতিটি সাবমেরিন বহু পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে পারে এবং রাডার এড়িয়ে শত্রুপক্ষে আঘাত হানতে সক্ষম। এই কৌশলগত পদক্ষেপ শুধু প্রতিরক্ষামূলক নয়, বরং রাশিয়াকে জানিয়ে দেওয়া যে এবার আর আগের মতো মুখ বুজে সহ্য করবে না ওয়াশিংটন।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন শুধু সামরিক নয়, অর্থনৈতিক চাপও বাড়িয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার দায়ে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ব্রিকস জোটের সদস্য দেশগুলো, বিশেষ করে ভারত, চীন ও ব্রাজিল, যেভাবে রাশিয়ার প্রতি নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছে, তাতে ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এই শুল্ক আরোপ মূলত একটি বার্তা, রাশিয়ার পাশে দাঁড়ালে মূল্য দিতে হবে।
বিশ্বজুড়ে এখন উদ্বেগ ছড়িয়েছে। কারণ, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিগুলো ভেঙে পড়েছে, কূটনৈতিক সংলাপ বন্ধ, উভয় পক্ষের মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি হুমকি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময়টিতে সামান্য ভুল ব্যাখ্যা কিংবা উসকানিমূলক বক্তব্যও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। একে অপরের শক্তি পরিমাপের এই খেলায় বিশ্ব গড়াতে পারে এমন এক স্নায়ুযুদ্ধের যুগে, যেখানে কেবল সামরিক নয়, কূটনৈতিক সম্পর্কও হয়ে উঠেছে হুমকির মুখে।
বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে মস্কো ও ওয়াশিংটনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে। এই উত্তেজনার পরিণতি হবে সমঝোতা না সংঘর্ষ, তা নির্ধারণ করবে সামনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
সূত্র: আলজাজিরা




























