আওয়ার টাইমস নিউজ:
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে একদল রোহিঙ্গা শরণার্থী। তাদের দাবি, নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে আন্দামান সাগরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জাতিসংঘ গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে এবং বলেছে, ভারতের এ পদক্ষেপ রোহিঙ্গাদের জীবনকে ভয়াবহ ঝুঁকিতে ফেলছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৬ মে দিল্লির বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ৪০ জন রোহিঙ্গাকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়। ছবি ও আঙুলের ছাপ নেওয়ার কথা বলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর তাদের আটক করে বিশেষ কেন্দ্রে পাঠানো হয়। পরদিন বিমানযোগে তাদের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে দেওয়া হয়।
শরণার্থীদের অভিযোগ, জাহাজে থাকার সময় হাত বেঁধে রাখা হয়, চোখ ঢেকে দেওয়া হয় এবং শারীরিক নির্যাতন করা হয়। তাদের ভাষ্য, ৮ মে সন্ধ্যায় রাবারের ছোট নৌকায় তুলে লাইফ জ্যাকেট দিয়ে সমুদ্রে নামতে বাধ্য করা হয়। বলা হয়েছিল, তারা ইন্দোনেশিয়ার কাছে পৌঁছেছে, কিন্তু আসলে তারা মিয়ানমারের জলসীমায় ছিল। স্থানীয় জেলেরা উদ্ধার করার পর তারা বর্তমানে জান্তাবিরোধী বাহটু আর্মির আশ্রয়ে রয়েছেন।
এই ঘটনার পর ভারতে থাকা অন্যান্য রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দিল্লির এক রোহিঙ্গা যুবক নুরুল আমিন বলেন, “আমরা ভয়ে আছি। যেকোনো সময় আমাদেরও ধরে নিয়ে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হতে পারে।”
এছাড়া, শরণার্থীদের দাবি— তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়েও জেরা করা হয়েছে। বিশেষ করে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নানা প্রশ্ন ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টমাস অ্যান্ড্রুজ জানিয়েছেন, এই ঘটনার পক্ষে তার কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তবে ভারতের মিশন থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। বিষয়টি ভারতের সুপ্রিম কোর্টেও উঠেছে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে রোহিঙ্গারা শরণার্থী নাকি অবৈধ অভিবাসী— সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
cgt