আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: সারা দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। ঘোষণা শেষে তারা শাহবাগ থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি শাহবাগে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তিনি আশ্বাস দেন যে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তবে শিক্ষার্থীরা এতে সন্তুষ্ট না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের নেতা এম ওয়ালীউল্লাহ বলেন, আজ বৃহস্পতিবার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি নিয়ে আলোচনা করবে। জনদুর্ভোগের কথা ভেবে তারা মাঠ পর্যায়ে বড় কর্মসূচি দিচ্ছেন না। আন্দোলনের অন্য নেতা জুবায়ের আহমেদ জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে এবং আজ সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো
১) ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা “প্রকৌশলী” উপাধি ব্যবহার করতে পারবে না।
২) তাদের নবম গ্রেডে পদোন্নতি রোধ করতে হবে।
৩) দশম গ্রেডের প্রবেশপদ শুধুমাত্র বিএসসি প্রকৌশলীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
বুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত দুই দিন ধরে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকাল তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে পদযাত্রা করলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহারের ঘটনা ঘটে। এতে চার শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। পুলিশেরও আট সদস্য আহত হন, তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে ডিএমপি জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ডিপ্লোমা প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা নিজেদের সাত দফা দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে গেলে কাকরাইল মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় ২৩ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সংগঠন জানিয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে আটক শিক্ষার্থীরা দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হবে বলে আশাবাদী।
সরকার গতকাল একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে, যা বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করে সুপারিশ দেবে। কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ওই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেছে। তারা বলেছে, প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গঠিত কমিটিতে প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের প্রতিনিধি নেই, তাই এ কমিটি গ্রহণযোগ্য নয়।
রাতের দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন বুয়েটের ভিসি ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান। তিনি পুলিশের হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংযম দেখাতে এবং আলোচনার পথে আসতে অনুরোধ করেন।
গতকাল সন্ধ্যায় সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রেলভবনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও কোনো সমাধান আসেনি। আজ আবারও সরকারের প্রতিনিধি, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে বৈঠক বসার কথা রয়েছে।