
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের সামরিক শক্তিতে যুক্ত হলো এক নতুন মাত্রা। বহুল আলোচিত ও আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন বিমানবাহী রণতরী ‘ফুজিয়ান’ এখন আনুষ্ঠানিকভাবে নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত। দীর্ঘ সময়ের সমুদ্রে পরীক্ষা ও পারফরম্যান্স মূল্যায়নের পর এই রণতরী মোতায়েনের অনুমোদন দেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
দক্ষিণ হাইনান প্রদেশের সানিয়া নৌঘাঁটিতে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর সদস্য এবং রণতরী নির্মাণকারী দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, কমিশনিং অনুষ্ঠানে দুই হাজারেরও বেশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে এ ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হন।
ফুজিয়ান চীনের তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী হলেও এটি প্রথম সম্পূর্ণ দেশীয় নকশায় নির্মিত জাহাজ। আগের দুই রণতরী রুশ নকশার অনুকরণে তৈরি হয়েছিল, কিন্তু ফুজিয়ান সম্পূর্ণ নিজস্ব সিস্টেম ও উন্নত সামুদ্রিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি।
এই রণতরীতে রয়েছে সমতল ফ্লাইট ডেক, এবং আধুনিক ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপুল্ট সিস্টেম, যার ফলে উন্নত ভারি যুদ্ধবিমান ও জেট সহজেই উঠানামা করতে পারবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ক্যাটাপুল্ট প্রযুক্তি বর্তমানে মার্কিন নৌবাহিনীর উন্নত শ্রেণির রণতরীগুলোতেই দেখা যায়। ফলে চীনের সামরিক সক্ষমতায় নতুন ধাপ যুক্ত হলো।
সমুদ্র পরীক্ষার সময় রণতরীতে ব্যবহৃত হয় চীনের নতুন প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার জে-৩৫, প্রাথমিক সতর্কীকরণ বিমান কেজে-৬০০, এবং প্রতিষ্ঠিত জে-১৫ যুদ্ধবিমান। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ক্যারিয়ার চীনের আকাশ ও সমুদ্র প্রতিরক্ষায় উল্লেখযোগ্য শক্তিবৃদ্ধি আনবে।
রাষ্ট্রীয় বিশ্লেষকদের মতে, এই রণতরীর মোতায়েন শুধু প্রতিরক্ষা জোরদার নয়, এটি চীনের আঞ্চলিক ভূমিকা, বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। ফুজিয়ান নামটিও প্রতীকী, কারণ এটি তাইওয়ানের বিপরীত উপকূলের প্রদেশের নামে রাখা হয়েছে।
বৈশ্বিক পর্যবেক্ষকদের ভাষ্য, চীন এখন এমন এক সামরিক অবস্থানে পৌঁছাচ্ছে যা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শক্তির ভারসাম্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে।




























