আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য চুক্তির আলোচনার মাঝেই ইসরা'ইল ফের চালিয়েছে ভয়াবহ বিমান হামলা। হামলায় গাজার জাবালিয়া, খান ইউনিস ও দেইর এল-বালাহসহ বিভিন্ন এলাকায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৮৪ জন ফিলিস্তিনি। এই হামলার সময়ই দোহায় কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাসের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় অংশ নিচ্ছিল ইসরা'ইল।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, বুধবার ভোর থেকে গাজা শহরের উত্তরের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে চালানো হামলায় প্রাণ হারান কমপক্ষে ৫০ জন। দক্ষিণের খান ইউনিসে ১০ জন এবং গাজার অন্যান্য অঞ্চলে আরও বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীরা জানিয়েছেন, জাবালিয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে শিশুদের মরদেহ মোবাইলের আলোতে খুঁজে বের করতে হচ্ছে।
মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ শহর থেকে আলজাজিরার সংবাদদাতা জানান, ইসরা'ইল লক্ষ্যভেদী হামলার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে আবাসিক এলাকাগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ বাধ্য হচ্ছে এলাকা ছেড়ে অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিতে।
এই মানবিক বিপর্যয়ের মাঝেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ জানান, যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা পুনরায় চালুর বিষয়ে আলোচনা অগ্রগতি লাভ করেছে। তিনি শিগগিরই একটি ইতিবাচক ঘোষণার আশা করছেন।
তবে অন্যদিকে, ইসরা'ইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন, “যুদ্ধবিরতি হলেও গাজায় আমাদের সামরিক অভিযান চলবে।”
এদিকে চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশ ইসরা'ইল-যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি বারবারা উডওয়ার্ড গাজায় ত্রাণ প্রবেশে সহযোগিতার আহ্বান জানান। চীনের প্রতিনিধি ফু কং এ পরিকল্পনাকে “মানবিক সহায়তাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানোর প্রচেষ্টা” হিসেবে নিন্দা জানান।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরা'ইলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫২ হাজার ৯০৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধ্বংস হয়েছে গাজার একটি বড় অংশের অবকাঠামো, বাস্তুচ্যুত হয়েছে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ।