আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরা’ইলি সেনাবাহিনী। রোববার (১৮ মে) দিনভর আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫১ জন ফিলিস্তিনি। মানবিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত গাজার পরিস্থিতি এই হামলায় আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, রোববার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দেড় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হ'ত্যা করেছে ইসরা’ইল।
গাজার বিভিন্ন হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে গাজার উত্তরাঞ্চলে, যেখানে একদিনেই ৬৯ জন নিহত হয়েছেন। এ অঞ্চলে ইসরা’ইলি সেনারা সবচেয়ে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসির একটি আশ্রয়কেন্দ্রে রাতের আঁধারে বোমাবর্ষণ চালায় ইসরা’ইলি বাহিনী। আশ্রয়কেন্দ্রটিতে থাকা মানুষদের বেশিরভাগই ছিল পূর্ববর্তী হামলা থেকে পালিয়ে আসা নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। ঘুমন্ত অবস্থায় ওই হামলায় কয়েক ডজন নিরীহ মানুষ নিহত হন।
ইসরা’ইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘অপারেশন গিডিয়ন চ্যারট’-এর অংশ হিসেবে গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে সমন্বিত স্থল হামলা চালানো হচ্ছে। দক্ষিণ কমান্ডের নিয়মিত ও রিজার্ভ সেনারা এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে।
তাদের দাবি অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে হামাসের ৬৭০টি সামরিক স্থাপনা, সুড়ঙ্গপথ ও ট্যাংকবিধ্বংসী অবস্থানে হামলা চালানো হয়েছে এবং বহু হামাস সদস্য ও অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। গাজার বেশকিছু ‘কৌশলগত’ এলাকাও তারা দখলে নিয়েছে বলে জানানো হয়।
এই দফায় হামলার তীব্রতা ও বিস্তৃতি দেখে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ফিলিস্তিনিরা বলছে, প্রতিদিন বাড়ছে লাশের সংখ্যা, কমছে নিরাপদ আশ্রয়ের জায়গা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতায় তারা হতাশ এবং একে মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
গাজার মানবিক বিপর্যয় ঘনীভূত হচ্ছে দ্রুত। বোমার শব্দে ঘুম ভাঙছে শিশুদের, ধ্বংসস্তূপে হারিয়ে যাচ্ছে জীবনের স্বপ্ন। একদিনে দেড় শতাধিক প্রাণহানি—এ যেন যুদ্ধ নয়, এক নিঃশব্দ গণহ'ত্যা।