আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: মাত্র এক বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটে আত্রাই নদীর তীরে প্রায় ৩০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত বাঁধ আবারও ভেঙে পড়েছে। মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে প্রবল পানির চাপে বাঁধটি ধসে পড়ে, যা স্থানীয় এলাকায় চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অথচ এই বাঁধটি ফেব্রুয়ারি মাসে একইভাবে ভেঙে গিয়েছিল এবং তারপর থেকেই চলছিল মেরামতের কাজ।
আত্রাই নদী বাংলাদেশ হয়ে ভারতে প্রবেশ করে এবং আবার ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে এসেছে। ফলে এই নদীতে হঠাৎ পানি বাড়লে সরাসরি প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোর ওপর। বর্তমানে টানা বৃষ্টিতে নদীর পানির স্তর ক্রমেই বাড়ছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুরোপুরি ধসে পড়লে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো ভয়াবহভাবে প্লাবিত হতে পারে।
বাঁধ ধসে পড়ার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। দক্ষিণ দিনাজপুরের সাংসদ ও ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন, এই বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তার ভাষায়, “বাড়ি তৈরির টিএমটি রড ব্যবহার করে বাঁধ তৈরি হয়েছে। এটি চরম দুর্নীতির ফসল। আমি চাই, এ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে প্রশাসনিক তদন্ত হোক।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাঁধ নির্মাণের অর্থের একটি বড় অংশ ঘুষ হিসেবে চলে গেছে প্রভাবশালী নেতাদের কাছে।
তবে এই অভিযোগ নাকচ করে বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, “এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বিজেপির দুর্নীতির অভিযোগ তোলার আগে নিজ দলে নজর দেওয়া উচিত। রাম মন্দিরের ছাদ থেকে জল পড়ছে, সেটাও তো দুর্নীতি!”—এভাবে তিনি পাল্টা আক্রমণ করেন।
এদিকে সাধারণ মানুষ রয়েছেন চরম উৎকণ্ঠায়। আত্রাই পাড়ের বাসিন্দারা দ্রুত বাঁধ সংস্কার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সুস্পষ্ট আশ্বাস না পাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে।
এই বাঁধ ভেঙে পড়ার ঘটনায় শুধু ভারতের এলাকাতেই নয়, বরং বাংলাদেশেও বন্যা ও নদীভাঙনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী দিনে বৃষ্টিপাত বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।