আওয়ার টাইমস নিউজ।
স্পোর্টস ডেস্ক: টি-টোয়েন্টির মতো ক্ষণস্থায়ী ও উত্তেজনাপূর্ণ ফরম্যাটে একসময় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দলগুলোর কাতারে জায়গা করে নেওয়ার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের। অথচ আজ সেই স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে লিটন কুমার দাসের অধীনে। টানা বাজে ফর্ম, দৃষ্টিকটূ অধিনায়কত্ব ও মাঠে আগ্রহহীনতা—সব মিলিয়ে এক দুর্বল আরব আমিরাতের বিপক্ষেও পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে টাইগারদের।
সিরিজে ঘুরে দাঁড়ালো আমিরাত, গর্বিত বিজয় উৎসবে ভাসছে আরব বিশ্ব!
প্রথম ম্যাচে হেরে গেলেও পরের দুই ম্যাচে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে রীতিমতো চাপে ফেলে দেয় আমিরাত। আর তৃতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটের দাপুটে জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় মধ্যপ্রাচ্যের দলটি। এটাই তাদের ইতিহাসের প্রথমবার কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়। আরব ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি এক মাইলফলক হয়ে থাকবে।
লিটনের নেতৃত্বে লজ্জার এক ইনিংস।
তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ইমন দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই শূন্য রানে ফিরে যান। অধিনায়ক লিটনের ব্যাটেও ছিল না দৃঢ়তা, তিনি ফেরেন ১০ বলে ১৪ রানে। অপরপ্রান্তে শেখ মেহেদী ৯ বলে ২ রানে সাজঘরে ফেরায় চাপে পড়ে যায় পুরো ব্যাটিং লাইনআপ।
তানজিদ হোসেন তামিম একটু লড়াই করলেও (১৮ বলে ৪০), ফিফটি ছোঁয়ার আগেই বোল্ড হয়ে যান। এরপর শামীম, রিশাদ ও জাকের আলীর ব্যর্থতা দলকে নামিয়ে আনে চরম বিপর্যয়ে। শেষ দিকে হাসান মাহমুদের ১৪ বলে ২৫ এবং শরিফুল ইসলামের ৭ বলে ১৬ রানে ভর করে কোনোমতে ১৬২ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ।
আলিশান-আসিফের ব্যাটে ভর করে আমিরাতের ইতিহাস গড়া জয়
১৬৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই শরিফুল ইসলামের বলে অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিমকে হারালেও ভেঙে পড়েনি আমিরাত। জুহাইব (২৩ বলে ২৯) ও এরপর আলিশান শারাফু দুর্দান্ত ব্যাটিং চালিয়ে যান। ৩৮ বলে ফিফটি পূরণ করা এই ব্যাটার শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁকে সঙ্গ দেন আসিফ খান, যিনি ২৬ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয় এনে দেন ৭ উইকেট ও ৫ বল হাতে রেখে।
লিটনের হাস্যকর অধিনায়কত্ব প্রশ্নবিদ্ধ, বিসিবির নীরবতা রহস্যজনক
একাধিক ম্যাচে বাজে ফিল্ডিং সেটিং, ভুল সময়ে ভুল বোলিং পরিবর্তন এবং নিজে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও লিটন দাস যেন কোনো জবাবদিহিতার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। ক্রিকেটবোদ্ধারা প্রশ্ন তুলছেন, এমন জঘন্য পারফরম্যান্সের পরও কীভাবে টাইগার বোর্ড লিটনের মতো একজন নির্বোধ-জ্ঞানহীন ক্রিকেটারকে অধিনায়কের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়? এ বিষয়ে বিসিবির পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা না আসায় সমর্থকদের মাঝে হতাশা চরমে।
বাংলার ক্রিকেটে আগামীর জন্য অশনিসংকেত
এই হারের ফলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সামগ্রিক কাঠামো নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। পরিকল্পনাহীন দল নির্বাচন, বারবার ক্যাচ মিস, ওভারপ্রতি ৮-১০ রান দেওয়া বোলারদের অব্যাহত সুযোগ দেওয়া—সব মিলিয়ে এক অন্ধকার ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে টাইগারদের বর্তমান অবস্থা।