আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পশ্চিম তীরে নতুন করে সহিংস অভিযান চালিয়েছে। শনিবার (৩১ মে) ভোররাতে পরিচালিত এই অভিযানে তারা একাধিক এলাকায় তল্লাশি ও হামলা চালায়। এরই অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনের জেনিন শহরে হজযাত্রীদের বহনকারী একটি বাসেও হামলা চালিয়েছে সেনারা। যাত্রীরা ছিলেন হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবগামী, যাদের অনেকেই বয়স্ক এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত।
তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি-র প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েলি বাহিনী শনিবার ভোরে জেনিনসহ পশ্চিম তীরের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান শুরু করে। জেনিন গভর্নর ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা হজযাত্রীদের একটি বাসে ইসরায়েলের একটি সামরিক যান সরাসরি ধাক্কা দেয়। সেই সময় বাসটি সৌদি আরবে হজের উদ্দেশ্যে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিশ্চিত করে জানায়, সেনাবাহিনীর যানটি ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ বাসটিকে আঘাত করে। যদিও ঘটনার ফলে কোনো শারীরিক হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে মানসিকভাবে যাত্রীরা চরম আতঙ্কে ভোগেন। তাদের অনেকে ছিলেন উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগে আক্রান্ত।
জেনিনের ডেপুটি গভর্নর মানসুর আল সাআদি এই ঘটনাকে চরম নিন্দনীয় বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “দখলদার বাহিনী সরাসরি ইচ্ছাকৃতভাবে বাসটিকে ধাক্কা দিয়েছে। এতে করে আমাদের ধর্মপ্রাণ নাগরিকদের মধ্যে ভয় ও মানসিক যন্ত্রণা সৃষ্টি হয়েছে। হজযাত্রীর মত পবিত্র অভিযাত্রার মুহূর্তেও তারা নিরাপদ নন।”
জানা যায়, ফিলিস্তিনিদের জন্য আন্তর্জাতিক ভ্রমণ দীর্ঘদিন ধরেই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। অধিকৃত পশ্চিম তীর থেকে তারা সাধারণত জর্ডানের মাধ্যমে বিদেশে যাতায়াত করে, কারণ ইসরায়েল আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ওপর নানা বাধা আরোপ করেছে। এমনকি হজযাত্রীদের ক্ষেত্রেও ইসরায়েলি বাহিনীর এই হামলা মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক চরম দৃষ্টান্ত হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
এই ঘটনার ভিডিও এবং ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, বাসের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং যাত্রীরা আতঙ্কে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁপছেন। এ ঘটনায় মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করেছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, ওয়াফা, মিডল ইস্ট আই, আল জাজিরা