আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: কাউকে রাগে বা হতাশায় বললেন— “তুই গজব খা”, “আল্লাহ তোকে অভিশাপ দিক”— কথাগুলো হয়তো আবেগপ্রসূত, কিন্তু ইসলামে এসব কথার পরিণতি হতে পারে ভয়ানক। পবিত্র কোরআন ও সহীহ হাদিস অনুসারে, অন্যায়ভাবে কাউকে অভিশাপ দেওয়ার ভয়াবহতা শুধু পরকালেই নয়, দুনিয়াতেও নিজের ওপর নেমে আসতে পারে।
‘লানত’ বা অভিশাপ কার জন্য?
কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন—
إِنَّ عَلَيْكَ اللَّعْنَةَ إِلَىٰ يَوْمِ الدِّينِ “তোর ওপর কিয়ামতের দিন পর্যন্ত অভিশাপ বর্ষিত রইল।” — সূরা হিজর, আয়াত ৩৫
এই আয়াত ইবলিস সম্পর্কে, যে আল্লাহর হুকুম অমান্য করেছিল। ইসলামে অভিশাপ বা লানত নির্দিষ্ট অপরাধীদের জন্য, কিন্তু অনেকেই তা রাগের মাথায় যে-কারও ওপর প্রয়োগ করেন।
রাসূলুল্লাহ ﷺ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন— একজন প্রকৃত মুসলমান কখনো অন্য মুসলমানকে কষ্ট দেয় না— মুখে হোক বা হাতে।
عَنِ ٱلرَّسُولِ ﷺ قَالَ: الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ ٱلْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ
অর্থ: “প্রকৃত মুসলমান সে, যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।” — (সহীহ বুখারী, হাদিস: ১০)
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় আলেমরা বলেন— কাউকে গালি, অভিশাপ দেওয়া কিংবা আঘাত করা— মুসলমানের চরিত্রের পরিপন্থী।
আরো এক হাদিসে রাসূল ﷺ বলেছেন—
“যদি কেউ এমন কাউকে অভিশাপ দেয়, যে এর উপযুক্ত নয়— তবে অভিশাপটি অভিশাপকেই ফিরে আসে।” — (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯০৬)
অর্থাৎ, রাগে মুখ ফসকে দেওয়া একটি অভিশাপ— নিজের ভাগ্যেও বিপদ ডেকে আনতে পারে।
নবীজি ﷺ-এর শিক্ষা: বদদোয়া নয়, হেদায়াতের দোয়া
তায়েফের বেদনাদায়ক ঘটনায় রাসূল ﷺ-কে যখন রক্তাক্ত করা হয়, তখন ফেরেশতা প্রস্তাব দিয়েছিলেন— চাইলে পুরো জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। অথচ তিনি বলেছিলেন—
“না, আমি চাই না ওরা ধ্বংস হোক। বরং আমি আশা করি, ওদের পরবর্তী প্রজন্মের কেউ না কেউ ঈমান গ্রহণ করবে।” — (সহীহ বুখারী)