
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলি নৌবাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে মানবিক ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ জব্দ করে জোরপূর্বক নিজেদের আশদাদ বন্দরে নিয়ে গেছে। সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। জাহাজটিতে ১২ জন মানবাধিকারকর্মী ছিলেন, যারা গাজার অবরুদ্ধ ও অনাহারে থাকা মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য, চিকিৎসা সামগ্রী এবং শিশুদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিয়ে যাচ্ছিলেন।
জানা গেছে, ‘ম্যাডলিন’ জাহাজটি পরিচালনা করছিল আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC)’। গত ১ জুন ইতালির সিসিলির কাতানিয়া শহর থেকে জাহাজটি রওনা হয়। এর লক্ষ্য ছিল মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া গাজার ভেতরে, যেখানে ইসরায়েলের অবরোধের কারণে শিশুরা পর্যন্ত অনাহারে মারা যাচ্ছে।
ইসরায়েলি নৌবাহিনী রোববার মধ্যরাতে গাজার উপকূল থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজটিকে আটক করে। এরপর এটিকে আশদাদ বন্দরে নেওয়া হয়। মানবাধিকার সংস্থা আদালাহ জানিয়েছে, আটককৃত কর্মীদের ইসরায়েলের রামলে শহরের একটি বন্দিশিবিরে রাখা হতে পারে এবং পরে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
জাহাজে থাকা ১২ মানবাধিকারকর্মীর তালিকায় ছিলেন সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য ও ফরাসি-ফিলিস্তিনি রিমা হাসান, জার্মানির ইয়াসেমিন আচার, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, তুরস্কের সুলাইব ওর্দু, ফ্রান্সের ওমর ফায়াদ, ফ্রান্সের পাস্কাল মৌরিয়েরাস ও ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে, স্পেনের সার্জিও তোরিবিও, নেদারল্যান্ডসের মার্কো ফন রেনেস, ইয়ানিস মোহামদি এবং ফ্রান্সের রিভা ভিয়া।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বন্দরে পৌঁছানোর পর যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রেটা থুনবার্গসহ যাত্রীদের ছবি প্রকাশ করে ইসরায়েল দাবি করে—তাদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্যই এই পদক্ষেপ।
‘ম্যাডলিন’ জাহাজে যে ত্রাণসামগ্রী ছিল, তার মধ্যে ছিল চাল, ময়দা, শিশুদের দুধ, ডায়াপার, স্যানিটারি প্যাড, চিকিৎসা সরঞ্জাম, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট এবং শিশুদের কৃত্রিম অঙ্গ। সব কিছুই ছিল গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের জন্য নির্দিষ্টভাবে সংগৃহীত ও প্রস্তুতকৃত।