আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: মানসিক রোগের ভয়াবহতা ঠিক তখনই শুরু হয়, যখন আমরা তা বুঝতেই পারি না। শরীরের ব্যথা হলে যেমন মানুষ দেরি না করে ডাক্তারের কাছে ছুটে যায়, তেমনি মনের অসুস্থতার দিকেও আমাদের সবার সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কারণ অবহেলিত মানসিক সমস্যা একসময় আত্মহনন পর্যন্ত গড়াতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশিরভাগ মানুষই জানেন না—তারা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। কারণ লক্ষণগুলো হয় খুব সূক্ষ্ম, নয়তো ধীরে ধীরে দেখা দেয়। তাই সময় থাকতে যদি এই ৭টি লক্ষণকে গুরুত্ব দেন, তবে অনেক বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।
মানসিক অসুস্থতার ৭টি সাধারণ লক্ষণ, যা অবহেলা করা বিপজ্জনক:
১. হঠাৎ আচরণগত পরিবর্তন
যদি আপনি আগের চেয়ে অনেক বেশি রাগান্বিত, উত্তেজিত, বা অস্বাভাবিকভাবে চুপচাপ হয়ে যান, তাহলে তা হতে পারে মানসিক চাপ বা বিষণ্নতার প্রাথমিক সংকেত।
২. ঘুমে সমস্যা (বেশি বা কম ঘুম)
যদি আপনার ঘুম একেবারে কমে যায় বা আপনি সারাদিন ঘুমিয়েই থাকতে চান, তাহলে এটি মানসিক অসুস্থতার একটি বড় লক্ষণ হতে পারে।
৩. আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
যেসব কাজ একসময় আনন্দ দিত—পড়াশোনা, গান, গল্প, প্রিয় মানুষের সঙ্গে সময় কাটানো—সেইসব কাজে হঠাৎ আগ্রহ হারিয়ে ফেলা মানে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য বিপদে রয়েছে।
৪. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা ভয়
সাধারণ দুশ্চিন্তা থেকে শুরু করে অকারণে ভয় পাওয়া, মনে অস্থিরতা, বা বারবার একই চিন্তা আসা—এসব মানসিক রোগের ইঙ্গিত হতে পারে।
৫. আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া বা নিজেকে মূল্যহীন মনে করা
"আমি কোনো কাজেই পারি না", "আমার কোনো দাম নেই"—এ ধরনের ভাবনা আপনার আত্মসম্মানকে ধ্বংস করে এবং বিষণ্নতার অন্যতম লক্ষণ।
৬. শারীরিক উপসর্গ, কিন্তু কোনো রোগ ধরা পড়ে না
প্রচণ্ড মাথাব্যথা, বুক ধড়ফড়, শ্বাসকষ্ট, কিন্তু সব রিপোর্ট নরমাল—এটা অনেক সময় অ্যাংজাইটি বা প্যানিক ডিজঅর্ডারের কারণে হয়।
৭. আত্মহত্যার চিন্তা বা মৃত্যু কামনা
এটি সবচেয়ে বিপজ্জনক সংকেত। যদি কখনও মনে হয়, "আমার বেঁচে থেকে কী হবে", তাহলে দেরি না করে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণ নেওয়া উচিত।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
মানসিক রোগ লজ্জার নয়, বরং চিকিৎসা গ্রহণের বিষয়। উপরের যেকোনো একটি লক্ষণ যদি টানা দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তবে অবহেলা না করে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন।
একজন মানুষ বাইরে থেকে হাসিখুশি দেখালেও ভিতরে অনেক ভেঙে যেতে পারে। তাই আশপাশের মানুষকে বোঝার চেষ্টা করুন। নিজেকে সময় দিন। মনে রাখবেন, মনের অসুখ লুকিয়ে রাখলে নয়, চিকিৎসা নিলেই সুস্থ হওয়া সম্ভব।
সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতামত।