আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে বলে কঠোর মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। শনিবার ইসরায়েলের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল ১২-এ প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন—এটা খুব বেশি হয়ে গেছে। এখন তাঁর বিদায় সময়ের দাবি।”
সাক্ষাৎকারে বেনেট ইঙ্গিত দেন, গাজায় চলমান যুদ্ধে নিরপরাধ ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যাকাণ্ড এবং সমাজে ভয়াবহ বিভক্তির জন্য নেতানিয়াহুই দায়ী। তিনি বলেন, “যেসব ফিলিস্তিনি শিশু ও বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে, তার রাজনৈতিক দায় নেতানিয়াহুর। এই ব্যর্থতার দায় তাঁকে নিতেই হবে।”
২০২১ সালে বেনেট নেতানিয়াহুবিরোধী দলগুলোকে একত্র করে জোট সরকার গঠন করেছিলেন, যার মাধ্যমে নেতানিয়াহুর ১২ বছরের শাসনের ইতি ঘটে। তবে জোট সরকার মাত্র এক বছরেই ভেঙে পড়ে এবং নেতানিয়াহু পুনরায় ক্ষমতায় ফেরেন।
“গাজা পরিস্থিতি রাজনৈতিক ব্যর্থতা, সেনাবাহিনী নয়”
বেনেট বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় নির্ভুল অভিযান পরিচালনা করেছে, কিন্তু রাজনৈতিক পর্যায়ে চরম সিদ্ধান্তহীনতা এবং অপারগতাই পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলেছে। তাঁর দাবি, “হামাসের হাতে এখনো যেসব জিম্মি আছেন, তাঁদের উদ্ধার করতে হলে দ্রুত সমন্বিত চুক্তি করতে হবে। এই দায়িত্ব আর পিছিয়ে দেওয়া যাবে না।”
বেনেটের ফিরে আসার গুঞ্জন
যদিও তিনি সরাসরি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে কিছু বলেননি, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বেনেট আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হলে নেতানিয়াহুর জন্য তা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। সাম্প্রতিক জনমত জরিপেও দেখা যাচ্ছে, বেনেট চাইলে আবারও একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে পারেন।
ইরানে হামলার পেছনে তাঁর অবদান
সাক্ষাৎকারে বেনেট দাবি করেন, সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় যেসব হামলা চালানো হয়েছে, তার পরিকল্পনা মূলত তাঁর আমলে শুরু হয়েছিল। “আমার সরকার এই অপারেশনের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিল,” বলেন বেনেট।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নেতানিয়াহু
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে গাজায় যে সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল, তা এখনও চলছে। এর মধ্যে হাজার হাজার নারী ও শিশু নিহত হয়েছে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছে।
এ অবস্থায় বেনেটের এই প্রকাশ্য ও কড়া সমালোচনা নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে আরও সংকটে ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।