
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সানারপাড় লন্ডন মার্কেটের জমজম জুয়েলার্সে রবিবার দুপুর ১২ দিকে ঘটেছে এক চাঞ্চল্যকর, ভয়ংকর প্রতারণার ঘটনা। ঘটনাটি সেখানকার স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি করেছে।
জমজম জুয়েলার্সের মালিক জনাব কামাল আওয়ার টাইমস নিউজকে জানান, রবিবার ২৯ জুন ঠিক দুপুর ১২টার দিকে তার দোকানে কাস্টমার হিসেবে আসেন স্মার্ট ভদ্রলোক বেশধারী মধ্যবয়স্ক একজন ভয়ংকর প্রতারক। শুরুতেই তিনি দোকান মালিক কামালের কাছে জানতে চান, “ভাই, আংটি বানাতে কত টাকা লাগবে?” কামাল তাকে উত্তর দেন, এত টাকা লাগবে। এরপর ভয়ংকর ওই প্রতারক কামালকে জিজ্ঞেস করে, “রেডিমেড কোনো ভালো ডিজাইনের আংটি এবং কানের দুল আছে?” কামাল বলেন, “হ্যাঁ, আছে।”
এরপর হঠাৎ প্রতারক লোকটি কামালের সামনে শয়তানের নিশ্বাস মেশানো তার মোবাইল এবং ছোট্ট একটি টাকার বান্ডিল রাখে। এরপরই কামালকে জিজ্ঞেস করে, “ভাই, আমাকে চিনতে পারছেন না? এই যে পাশেই কাপড়ের দোকানটা আমার। আমি একটু চাবিটা দিয়ে আসি।” এই কথা বলেই প্রতারক তার মোবাইল এবং ছোট্ট টাকার বান্ডেলটি দোকানের মালিক কামালের সামনে রেখে ২ মিনিটের জন্য বাইরে চলে যায়। এরপর ১ মিনিটের মধ্যেই প্রতারকের ভয়ংকর রাসায়নিক পদার্থ মেশানো মোবাইল এবং ছোট্ট টাকার বান্ডেলটি কামালের মস্তিষ্ককে নিষ্ক্রিয় করে দেয়!
দু’মিনিট পরই প্রতারক এসে কামালকে বলে, “ভাই, কানের দুলটা এবং আংটিটা আমাকে একটু দিন, আমার দোকানে আমার মা বসে আছে, মাকে দেখাবো, মা পছন্দ করলে নিবো।” সাথে সাথেই নিয়ন্ত্রণহীন জুয়েলার্সের মালিক কামাল অর্ধ লক্ষ টাকার একজোড়া কানের দুল এবং একটি আংটি প্রতারকের হাতে তুলে দেন। নিয়ন্ত্রণহীন কামাল অপেক্ষা করতে থাকেন লোকটির জন্য। পাঁচ মিনিট পর তিনি বুঝতে পারেন যে, তার সাথে ভয়ংকর প্রতারণা করা হয়েছে। তখন সাথে সাথে কামাল লোকটিকে খোঁজার জন্য বের হলেও তাকে আর খুঁজে পাননি।
কামাল জানিয়েছেন, প্রতারণার ঘটনা চলাকালীন সময়ে কামালের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল যে লোকটি একজন প্রতারক, কিন্তু রহস্যজনকভাবে লোকটিকে কামাল কিছু বলতে পারছিলেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাসায়নিক পদার্থের ঘ্রাণের কারণে কামাল কিছুটা সময় বাস্তবে জেগে থাকলেও মূলত ঘুমন্ত ছিলেন।
এই ঘটনায় লন্ডন মার্কেট এলাকার স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তারা তীব্র ক্ষোভের সাথে অভিযোগ করে জানান, এ সমস্ত ভয়ংকর প্রতারক চক্র পুলিশের হাতে আটক হলেও পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে তারা ছাড়া পেয়ে যায় এবং এই কাজগুলো তারা বেপরোয়া ভাবে করতেই থাকে। তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, অনতিবিলম্বে এই সমস্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।