আওয়ার টাইমস নিউজ।
টাইমস স্পোর্টস ডেস্ক: ক্রিকেটে বারবার প্রমাণিত—শুধু ভালো শুরু করলেই জয় নিশ্চিত হয় না। পাকিস্তানের ফাইনাল ইনিংস তার এক নতুন প্রমাণ। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ভারত-পাকিস্তানের ঐতিহাসিক এশিয়া কাপ ফাইনাল শুরু হয়েছিল একেবারে পাকিস্তানের ছন্দময় ব্যাটিং দিয়ে। ওপেনিং জুটি যেন ভারতীয় বোলারদের অসহায় করে তুলেছিল। কিন্তু একবার ফারহান বিদায় নিতেই সব বদলে গেল।
ওপেনিং ঝড়ে আশার আলো
শাহিবজাদা ফারহান ব্যাট হাতে ছিলেন বিস্ফোরক। মাত্র ৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংস-যেখানে ছিল ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা। তার সঙ্গে ফখর জামানের ৫৮ বলে ৮৪ রানের জুটি পাকিস্তানকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল এক বিশাল স্কোরের স্বপ্ন। ৯.৪ ওভারে ৮৪ রান—টি-টোয়েন্টির ভাষায় এটা একেবারে ‘ড্রিম স্টার্ট’।
ফারহানের বিদায়, ধসের শুরু
কিন্তু ক্রিকেট তো কেবল শুরু নয়, শেষটাও গুরুত্বপূর্ণ। বরুণ চক্রবর্তীর বলে ফারহানের ক্যাচের পরই যেন পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে আগুন নিভে যায়। একে একে সাইম আইয়ুব, মোহাম্মদ হারিস, ফখর জামান—সবাই হয়ে গেলেন সাজঘরের পথিক।
৯.৪ ওভারে ৮৪ রানের পর পাকিস্তান আরেকটা ৮.২ ওভারে হারাল ১০ উইকেট। শেষমেশ পুরো দল গুটিয়ে গেল ১৪৬ রানে। অর্থাৎ ১১২ রানে ১ উইকেট থেকে ১৪৬ রানে অল আউট—মাত্র ৩৪ রানের ভেতর ৯ উইকেট পতন!
ভারতের স্পিন-ফাঁদ ও ধৈর্যের অভাব
ভারতের বোলাররা ধৈর্য ধরে পাকিস্তানি ব্যাটারদের ভুলের অপেক্ষা করেছে। কুলদীপ যাদব, বরুণ চক্রবর্তী আর অক্ষর প্যাটেল মিলে তৈরি করেছিলেন এমন এক জাল, যেটা থেকে বের হতে গিয়ে পাকিস্তানি ব্যাটাররা একে একে ধরা দিয়েছেন।
এটা কেবল টেকনিকের পরাজয় নয়, বরং মানসিক ভেঙে পড়ার গল্পও। ওপেনিং সাফল্যের পর মিডল অর্ডারে কেউই দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ লম্বা করতে পারলেন না।
ইতিহাস বনাম বর্তমান
ফাইনালের আগে পরিসংখ্যান পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। বড় প্রতিযোগিতার ফাইনালে ভারত-পাকিস্তানের লড়াইয়ে পাকিস্তান এগিয়ে (১২ বারের মুখোমুখিতে পাকিস্তান ৮ জয়, ভারত ৪ জয়)। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালে ভারতকে ১৫০ রানে হারানো সেই স্মৃতি এখনো টাটকা।
কিন্তু ক্রিকেট কেবল ইতিহাস দিয়ে চলে না। দুবাইয়ের এই রাত দেখিয়ে দিল—মনস্তাত্ত্বিক দৃঢ়তা আর মুহূর্ত সামলানোর ক্ষমতা না থাকলে, বড় মঞ্চে পরিসংখ্যানের জোর কাজ করে না।
ভারতের সামনে সহজ সমীকরণ
এখন ভারতের সামনে লক্ষ্য মাত্র ১৪৭ রান। এশিয়া কাপে নবম শিরোপা জেতার পথে এই রান বড় কোনো বাধা নয়। তবে ভারতীয় ব্যাটাররা জানেন, পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ এখনও ভয়ঙ্কর। শাহীন আফ্রিদি, হারিস রউফ কিংবা নওয়াজরা যদি প্রথম পাওয়ারপ্লেতে আগুন ঝরান, ম্যাচে উত্তেজনার ঝড় বইতে পারে।